শফিউল আলম, রাউজান »
রাউজানের কাঁশখালী খালের দুপাড়ে বিপুল পরিমাণ জমিতে সবজি ক্ষেতের চাষাবাদ হয়েছে। কাঁশখালী খালের দুপাড়ের ফসলি জমিতে উৎপাদিত সবজি রাউজানের হাট বাজারসহ চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন এলাকার হাট বাজারে ব্যবসায়ীরা বিক্রয় করছে। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার হিংগলা, দক্ষিন হিংগলা, কলমপতি, রাউজান পৌরসভার সাপলঙ্গা, ঢেউয়া পাড়া, হাজী পাড়া শরীফ পাড়া, বিনাজুরী ইউনিয়নের লেলাঙ্গারা এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত কাঁশখালী খাল। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার পাহাড়ী এলাকা থেকে আসা কাঁশখালী খাল। কাঁশখালী খালের দুপাড়ে হিংগলা, কলমপতি, সাপলঙ্গা, ঢেউয়াপাড়া, হাজী পাড়া, বিনাজুরী ইউনিয়নের লেলাঙ্গারা এলাকায় ফসলি জমিতে প্রতি বছর শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করা হয়। শীতকালীন সবজির চাষাবাদের মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, বেগুন, টমোটা, সিম, আলু মরিচ, মিষ্টি আলু, বরবটি, পুদিনা, ধন্যাপাতা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক, পালংক শাক, মুলা, সরিষা ইত্যাদির চাষাবাদ করা হয়। তবে শরীফ পাড়া, লেলাঙ্গারা, হাজী পাড়া, ঢেউয়া পাড়ায় সবজির চাষাবাদ করা হয় বেশি। শরীফ পাড়া, লেলাঙ্গারা, হাজী পাড়া, ঢেউয়া পাড়ায় কাঁশখালী খালের দুপাড়ে একশত একর ফসলি জমিতে সবজির চাষাবাদ করেন শতাধিক কৃষক। এখানে এসে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে সবজি ব্যবসায়ীরা কৃষক থেকে সবজি ক্রয় করে রিক্সা ভ্যান, সিএনজি অটোরিক্সা, পিকআপ ট্রাকে করে নিয়ে যায়। শরীফ পাড়া এলাকার কৃষক মোঃ সুমন বলেন, তার ভাই মোঃ ইসমাইলসহ মিলে এক এশর ত্রিশ শতক জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি ক্ষেতের চাষাবাদ করেন। চাষাবাদে তার খরচ হয় ২ লাখ টাকা। এপর্যন্ত ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রয় করেছে দেড় লাখ টাকার। আরো দেড় লাখ টাকার মতো বিক্রয় করতে পারবে বলে আশা করছেন কৃষক মোঃ সুমন। কৃষক আবদুল শুক্কুর বলেন, এবছর ৬০ শতক জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষাবাদ করতে তার খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। সেগুলো বিক্রয় করে এক লাখ টাকা খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে। তিনি বলেন, সবজি ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি ফুলকপি ২০ টাকা ও বাঁধাকপি প্রতি কেজি ২৫ টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে যায় কৃষকদের কাছ থেকে। কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাওয়া ফুলকপি প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা করে বাজারে বিক্রয় করেন সবজি ব্যবসায়ীরা। শরীফ পাড়া, লেলাঙ্গারা, হাজী পাড়া, ঢেউয়া পাড়া এলাকার কাঁশখালী খালের দুপাড়ের ফসলি জমি থেকে ১০ মেট্রিক টনের বেশি ফুলকপি ও বাঁধাকপি, শালগম, লাল শাক, মুলা, লাউ, বিক্রয় করেন কৃষকেরা। এষানকার কৃষকদের সবজি ধোয়ার জন্য কাঁশখালী খালের মধ্যে পাকা ঘাট নির্মাণ ও গভীর নলকুপ বসিয়ে দিয়েছেন রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ। এয়াড়া কৃষকদের গড়ে তোলা আই পি এম ক্লাব কার্যালয় নির্মাণ করে দেওয়া হয়। রাউজান উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুম কবির বলেন, এই এলাকায় কাঁশখালী খালের দুপাড়ের বিপুল পরিমাণ ফসলি জমিতে সবজির চাষাবাদ করেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের সার, বীজ, সেচ পাম্প, পাওয়ার টিলার দেওয়া হয়েছে। এখানকার ফসলি জমিতে সবজির ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রয় করে যে টাকা আয় করেন ঐ টাকা দিয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাছন্দে জীবন যাপন করেন।