শুভ্রজিৎ বড়ুয়া »
ঈদের দিনে নতুন কাপড় পরে ঘুরে বেড়ানো বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ। ফলে দোকানিরাও ঈদ আসার আগে দোকান সাজান বাহারি নতুন ডিজাইনের কাপড়ে। মার্কেটগুলোও রমজান আসার আগে নতুন ডিজাইনের কাপড় তুলে ক্রেতাদের তা জানিয়েছে মুঠোফোনের খুদেবার্তায়। আর ক্রেতারা দাম বাড়ার শঙ্কায় রমজান আসার আগেই ভিড় করছেন নগরের মার্কেটগুলোতে।
নগরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়- ক্রেতারা পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ও বোরকার দোকানে ভিড় করছে। বেশ কিছু দোকানে বিক্রয়মূল্যে ছাড়ের ব্যানারও টাঙানো হয়েছে। তবে ক্রেতাদের আকর্ষণ নতুন ডিজাইনের পোশাকে। তারা গরমে পরিধানযোগ্য সুতি পোশাক কেনার চেষ্টা করছেন। এছাড়া জর্জেট কাপড়ের থ্রি-পিস, হিজাব-বোরকাসহ বাচ্চাদের কাপড় কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। এমন দৃশ্য নিউমার্কেট, পুলিশ প্লাজা, রিয়াজউদ্দীন বাজার, হকার মার্কেট, পাহাড়তলী সিডিএ মার্কেট, স্যানমার, ফিনলে স্কয়ার ও সেন্ট্রাল প্লাজায় দেখা গেলেও ক্রেতাদের আনাগোনা কম দেখা যায় আমিন সেন্টার, ইউনেস্কো ও আফমি প্লাজায়।
ঝুমু নামে সেন্ট্রাল প্লাজায় আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘রমজানে রোজা রেখে শপিং করা কষ্টকর। এছাড়া দোকানে নতুন কালেকশনের খবর ফেসবুকে ও তাদের ম্যাসেজে দেখেছি। তাই রমজানের আগে কেনাকাটা পর্ব শেষ করতে এসেছি। এখনতো সবকিছুরই দাম বাড়তি। কিন্তু পরেতো দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই দেরি করে কেনাকাটা করতে গিয়ে কষ্ট ও দাম বাড়ার সুযোগ কেন দেবো?’
শফিক নামে নিউমার্কেটে আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘সিটি কলেজে পড়ি। তাই কলেজ শেষে ঈদের জন্য দুটা পাঞ্জাবি নিতে এসেছি। আগে খুব একটা ভালোভাবে দেখিনি। কিছু দোকানে ছাড় দেখেছি। কিন্তু এখন দেখছি ছাড়ের পোশাকগুলো সব শীতের পোশাক। তবে ডিসকাউন্ট ভালোই দিয়েছে। তাই ওখান থেকেও একটা ডেনিম শার্ট নিয়েছি। তবে ঈদের পোশাকের কালেকশন ভালোই। দামও খুব একটা বেশি না। আমার অনেক বন্ধু অনলাইনে ঈদের শপিং করছে।’
অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ থাকার পরও মার্কেটে ঘুরে কেনাকোটা করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্যানমারের আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘ঈদের শপিং মার্কেট ঘুরে করতে না পারলে তো কোনো মজা থাকে না। তাই মার্কেট ঘুরে কিনতে আসলাম। এছাড়া অনলাইনে কেনাকাটায় একটা রিস্ক থাকে। মার্কেটে আসলে দেখেশুনে দর করে নেওয়ার একটা সুযোগ থাকে।’
সিডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘কাপড়ের কালেকশন শবে বরাতের পর থেকেই চলে আসছে। তবে পাইকারি পর্যায়ে কাপড়ের দাম একটু বেশি। ক্রেতারা এটা মেনে নিয়েছে। এখনতো সবকিছুর দাম বাড়তি। নতুন ডিজাইনের লেহাঙ্গা, থ্রি-পিস, কুর্তিসহ বাচ্চাদের বিভিন্ন পোশাক এসেছে। আশা করছি, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের বিক্রি ভালো হবে।’
ঈদের কেনাকাটা প্রসঙ্গে বিপণি বিতান মার্চেন্টস ওয়েলফেয়ার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশিদ আলম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এবার ঈদের প্রায় সব কালেকশন চলে এসেছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, কেনা দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করার জন্য। ক্রেতারা যেন কোনোভাবে শপিং করতে এসে বিব্রত না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে বলা হয়েছে। বিক্রিত পণ্য পছন্দ না হলে ক্রেতারা ফেরত দেবেন। এ নিয়ে যেন কোনো সমস্যা না হয়। এসব দেখার জন্য আমরা একটি মনিটরিং টিম রাখবো। এবার আমাদের বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা গতবারের চেয়ে বেশি। গতবার আমরা প্রায় ১৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছি। এ বছর আমরা ২০০ কোটি টাকার বেশি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এজন্য সকল দোকানিকে ক্রেতাবান্ধব আচরণ করতে বলা হয়েছে।’