রপ্তানি আয় বাড়ানোর সকল চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে

সেপ্টেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি বাবদ বাংলাদেশ আয় করেছে ৪৩১ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। এই আয় গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে সেপ্টেম্বরে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ইপিবির তথ্যমতে, তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, বাইসাইকেলসহ সব খাত মিলে সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩১ কোটি মার্কিন ডলার। জুলাই ও আগস্ট মাসে রপ্তানি হয়েছিল যথাক্রমে ৪৫৯ ও ৪৭৮ কোটি ডলারের। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি আয় কমেছে। সে ক্ষেত্রে জুলাইয়ের তুলনায় কমেছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ আর গত আগস্টের তুলনায় কমেছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সব মিলে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস, অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ছিল ১ হাজার ২৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। এই তিন মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩৯৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ, ২ দশমিক ১৭ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রপ্তানি আয় হয়েছে।
খাতওয়ারি রপ্তানি আয়ের মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে ৬৭৬ কোটি ডলারের নিট পোশাক এবং ৪৮৫ কোটি ডলারের ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ সময় নিট পোশাকে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। ওভেন পোশাকের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ২৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
আর দু বছর পর বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পাচ্ছে। সে সময় রপ্তানি ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি না নিলে শেষে পস্তাতে হবে। একটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। প্রধানমন্ত্রী অনেক আগে থেকে রপ্তানি বহুমুখীকরণের কথা বলছেন। তাঁর কথাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেদিকে নজর দেওয়া এখন সময়ের দাবি।