যুবদল নেতার মৃত্যু তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

সুপ্রভাত ডেস্ক »

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা মো. তৌহিদুর রহমানের (৪০) মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার দফতরের এক বিবৃতিতে এ নির্দেশনার কথা জানানো হয়। হেফাজতে যে কোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কুমিল্লায় পুলিশ তৌহিদুল ইসলাম নামে এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরে তার বাড়ি থেকে আটক করার পর তাকে নির্যাতন করে।’
এতে বলা হয়, জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সরকারে দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনগুলোর বেশিরভাগই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পুলিশি জেরা, অপরাধ ব্যবস্থাপনা ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেকোনো সম্ভাবনা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
 
তৌহিদুল ইসলাম নামের ওই যুবদল নেতাকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আটক করেছিল বলে পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে। তিনি কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি সদরের পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
 
তৌহিদুল ইসলামের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তৌহিদুলকে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে দিকে পুলিশ তাদের ফোন করে জানায়, তৌহিদুল আহত অবস্থায় গোমতী নদীর পাড়ে পড়ে আছে, আপনারা হাসপাতালে আসেন। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।’
 
এদিকে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় এক সেনা কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ভোর ৩টার দিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে আটক করা হয় মো. তৌহিদুর রহমানকে। একই দিনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ওই সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।