সুপ্রভাত ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরে চীনা কনস্যুলেট আগামী শুক্রবারের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেইজিং একে দেখছে ‘রাজনৈতিক উস্কানি’ হিসেবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, হঠাৎ করেই হিউস্টন কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং কনস্যুলেটটির সব ধরনের কাযক্রম বন্ধ করতে বলা হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন’ আখ্যা দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মর্গান অর্টাগাস বলেন, আমেরিকান মেধাস্বত্ব ও ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার জন্যই কনস্যুলেট বন্ধের এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছেন, এটা ‘ভয়ানক’ ও ‘অহেতুক’।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) বিকালে স্থানীয় পুলিশ জানায়, কনস্যুলেট চত্বরে ধোঁয়া ওঠার খবর পেয়ে তারা সাড়া দেন। শহরের মাঝামাঝি জায়গার মনট্রোস বুলেভার্ডে কনস্যুলেটটি অবস্থিত। কিছু ব্যক্তি ধোয়া ওঠার ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, কম্পাউন্ডের ভেতরে কর্মকর্তারা নথিপত্র আগুনে পোড়াচ্ছিলেন। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত ছুটে এসেছিল।
কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পরই সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সর্বশেষ হংকংয়ে বেইজিং কর্তৃক জাতীয় নিরাপত্তা বিল পাস করার পর চীনের ওপর ক্ষুব্ধ হয় যুক্তরাষ্ট্র। এ সময় দক্ষিণ চীন সাগরে দুই দেশের নৌবাহিনী সামরিক মহড়া দিয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করে। এবার ঘটল কনস্যুলেট বন্ধের ঘটনা।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরির কার্যক্রম নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় মদদে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ তোলে। তাদের অভিযোগ, যেসব ল্যাবে গবেষণা চলছে সেসব ল্যাবকে টার্গেট করছে চীনের হ্যাকাররা। দুজন চীনা নাগরিককে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য অভিযুক্তও করা হয়েছে।
ওয়াং ওয়েনবিনের কথা বলার কিছুটা সময় পরই যুক্তরাষ্ট্র পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে কনস্যুলেট বন্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। তাদের বিবৃতি, ‘আমেরিকানদের মেধাস্বত্ব ও আমেরিকানদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই আমরা হিউস্টনের পিআরসি (পিপলস রিপাবলিক অব চায়না) কনস্যুলেট জেনারেল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচটি কনস্যুলেটের মধ্যে হিউস্টনেরটি অন্যতম। এছাড়া ওয়াশিংটনে রয়েছে চীনা দূতাবাস।
এক বিবৃতিতে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কনস্যুলেট বন্ধের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে উস্কানিমূলক ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একতরফাভাবে নেয়া, যা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক শিষ্টাচার এবং কনস্যুলেট নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন।’