সুপ্রভাত ডেস্ক
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের আগমন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার বার্তাই বহন করে। এই আগমনকে আমরা স্বাগত জানাই। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
এ সময় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তা এসেছেন এবং সহসাই আরও বেশ কয়েকজন আসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা প্রায়ই আসছেন এবং চলতি মাসে সে দেশের পররাষ্ট্র দফতরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের আসার কথা রয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। তাদের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা রয়েছে এবং বিশ্বাঙ্গনেও বহুমাত্রিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা কাজ করি। বাংলাদেশের উন্নয়নেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরাট ভূমিকা রাখছে।’
বিএনপির মহাসচিব ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের বলেছেন, ‘কোনও দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না’- এ নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। রাষ্ট্র ক্ষমতায় কারা যাবে, সেটি নির্ধারণ করার মালিক হচ্ছে জনগণ। বিএনপির যদি কোনও নালিশ থাকে, তা দিতে হবে জনগণের কাছে, বিদেশিদের কাছে নয়।’
জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এবং যুক্তরাজ্যে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেখানে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও ঠিক একইভাবে নির্বাচন হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নালিশ তারা করতে পারে, কিন্তু আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো নালিশ জনগণের কাছে করার জন্য, বিদেশিদের হাতে-পায়ে না ধরার জন্য।’
বিএনপির সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে শুরু হবে এমন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে নিহত হয়েছিলেন অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। চট্টগ্রাম খুব তাৎপর্যপূর্ণ। তারা তো মাঝে মধ্যেই এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তো এক দফা আন্দোলন চট্টগ্রামেই মারা যায় কিনা, সেটিই দেখার বিষয়।’
ভূ-রাজনীতির কোনও চাপ সরকারের ওপরে আছে কিনা এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কোনও চাপে নাই। ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা করেছে, সেটি আমরা সামাল দিয়েছি। সেটি করার সামর্থ্য বিএনপির এখন নেই এবং ভূ-রাজনীতির কারণে আর এ ধরনের আন্দোলন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা জানি কখন কী করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো বর্জন করেছিল এবং তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এবং জনগণকেও বর্জন করার, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। তাদের এত প্রচারণার মধ্যেও ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। সুতরাং, আগামী নির্বাচনেও জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল বিষয় জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কিনা। বিএনপির অংশগ্রহণ আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে তারা যদি নাও আসে, আগামী নির্বাচনে জনগণ থাকবে।’
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি : সংবাদপত্রে প্রতিফলন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, পরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, গ্রন্থকার গবেষক পপি দেবী থাপা প্রমুখ মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।