নিজস্ব প্রতিবেদক »
টাকা গুনে নেয়া হয়েছে। বুকভরা নিশ্বাস অশ্রুসিক্ত চোখ চেয়ে আছে কালুর দিকে। এবার বিদায়ের পালা। একে অপরের চোখে চোখ রাখতেই গড়িয়ে পড়লো অশ্রুজল। ভালোবেসে মাথায়, গলায়, পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে ‘কালু ভালো থাকিস’। যাওয়ার সময় রাস্তায় দুষ্টামি করবি না। যে ক’দিন আছে খাওয়া দাওয়া ভালো করে খাস বলেই জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দিলেন আইয়ুব আলী। কালুর চোখেও জল বেয়ে পড়ছে। মালিকের সব কথা যেন সে বুঝতে পারছে। কথা হচ্ছে হৃদয়ে। কালু আমার ৩ বাচ্চার মধ্যে সবার বড় আর আদরের। একটু আদর পাগলাও। খুবই শান্ত স্বভাবের। আদর হলে খাওয়া লাগে না। ভালোভাবে রাখবেন কালুকে। আল্লাহ কালুকে কবুল করুন বলেই কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়লেন। আর বললেন আদর করে দিয়েছি। নিয়ে যান। কোরবানি পশুর হাটে এভাবেই যত্নে লালিত পশুকে শেষ বিদায় জানান মালিক।
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। নগর ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর প্রতিটি অলিগলিতে কোরবানি পশুর মেলা বসেছে। অনেকেরই কেনা হয়েছে কোরবানি পশু। কেউ গরু নিয়ে যেতে দেখলেই আশপাশ থেকে ভাই কত হয়েছে? বাড়ির আঙ্গিনা, মাঠ, রাস্তাসহ প্রতিটি বাড়ির পার্কিং ভর্তি গরু। বেশিরভাগ মানুষ গরু কিনে ঘরে নিয়ে গেছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রিয় জিনিস কোরবানি দেওয়ার মধ্যদিয়ে পালিত হবে ঈদুল আজহা। এদিকে হাটের মালিকেরা চেয়ে রয়েছেন আজকের দিনের বেচাকেনার উপর। আজকের দিনের বেচাকেনার উপর নির্ভর করছে হাটের লাভ ক্ষতির হিসেব।
এ বছর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসেছে কোরবানি পশুর হাট। তবে জনসচেতনতার কারণে বেশিরভাগ মানুষ খামার থেকে কিনে নিয়েছে কোরবানি পশু। যার ফলে হাটে কিছুটা ক্রেতা শূন্যতা দেখা দেয়। কোরবানি হাটে গরু বিকিকিনি কম হলেও বেশিরভাগ মানুষের গরু কেনা শেষ হয়েছে। হাটে এখনো রয়ে গেছে প্রচুর গরু। আজকের দিনে সকল গরু বিক্রির আশায় রয়েছেন বেপারিরা। তবে যাদের বিক্রি শেষ তারা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নগরবাসী বলছেন, চলতি বছরে করোনা সংক্রমণ রোধে সচেতন মানুষ হাট বিমুখ হয়েছেন। উত্তর বঙ্গসহ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বেপারিরা আসায় মানুষ কিছুটা শঙ্কিত ছিল। তাছাড়া দামও ধরে রেখেছিল। এতে হাটের তুলনায় খামার থেকে বেশি বিক্রিত হয়েছে কোরবানি পশু। তবে বেশিরভাগ মানুষের গরু কেনা শেষ।
এ মুহূর্তের সংবাদ