অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের দিকেই আসছে। দেশের তিন বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সমুদ্রবন্দরগুলোকে মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার অর্থ হলো, ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশমুখী। এখন এর মোকাবিলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার সময়।
গতকাল সকালে ঘূর্ণিঝড় মোখা প্রবল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে পরিণত হয় বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে সেটি হয় সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। বাতাসের গতিবেগ ৮৮ থেকে ১১৭ হলে তাকে বলা হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর বাতাস যদি ১১৭ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে বয়, তবে তা হয় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর ২২০ কিলোমিটারের ওপরে বাতাসের গতিবেগ উঠলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।
ঘূর্ণিঝড় আগামী রোববার দুপুরের দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এর অগ্রভাগের প্রবেশের কারণে আজ শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল বা কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। কক্সবাজার অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত পাল্টানো বলে দিচ্ছে মোখা মোকাবিলায় এখন প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার সময়। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সব স্তরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, পৌর ও ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটি সভা করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলায় ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। যাতে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৯৯ জনের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এই জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৮ হাজার ৬০০ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় ৫৩০টি স্থায়ী ও ৫০০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেগুলোর ধারণক্ষমতা ৫ লাখ ১ হাজার ১১০ জন। এরই মধ্যে সিপিপির ৮ হাজার ৮৮০ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মোখার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিজস্ব ‘অ্যালার্ট’ জারি করেছে এবং বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চাল-বিস্কুটসহ শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, পর্যাপ্ত খাওয়ার স্যালাইন মজুত রাখাতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে হবে এখনই।
এ মুহূর্তের সংবাদ