সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
লিওনেল মেসির ঠিকানা পরিবর্তন হবে আগামী ১ জুলাই। ৩০ জুন পর্যন্ত তিনি রয়েছেন পিএসজিতে। এরপর ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে কোথায় যাবেন তিনি? পুরনো ঠিকানা বার্সেলোনায় নাকি পেট্রোডলারের টানে সৌদি আরব? জানা যাবে খুব শিগগিরই।
তার আগে বিশ্বজয়ী এই ফুটবলারের ঠিকানা ঠিক করা নিয়ে চলছে তুমুল লড়াই। কে কার ঠিকানায় মেসিকে কতা টাকা দিয়ে নিতে পারে, সে লড়াই শুরু হয়েছে বহু আগেই। যদিও এ ক্ষেত্রে মেসির অবস্থা, ‘যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়া পড়শির ঘুম নাই’- এর মতো। তিনি নিজে এখনও এ নিয়ে কোনো কিছুই বলেননি। কিন্তু তাকে নিয়ে টানাটানিতে যুক্ত রয়েছে বার্সেলোনা এবং সৌদি ক্লাব আল হিলাল। খবর জাগোনিউজের।
এরই মধ্যে একবার খবর রটে গিয়েছিলো, আল হিলালের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে ফেলেছেন মেসি। দুই বছরের জন্য প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা পেতে যাচ্ছেন সৌদি এই ক্লাব থেকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এএফপি, ইএসপিএন এ সংবাদ প্রকাশ করেছে। তাদের বরাতে বিশ্বের প্রায় সব সংবাদ মাধ্যমই মেসির এই ট্রান্সফারের নিউজ প্রকাশ করেছিলো।
যদিও মেসির বাবা হোর্হে মেসি পরে এই খবর অস্বীকার করেন। মেসির বাবার অস্বীকার করার আগ পর্যন্ত সবাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো, পিএসজি তারকার পরবর্তী ঠিকানা হতে যাচ্ছে আল হিলাল। কিন্তু সিনিয়র মেসির অস্বীকারের পর বার্সা সমর্থকরা আবারও আশায় বুক বাধতে শুরু করেছে।
এবার এ নিয়ে কথা বলেছেন খোদ বার্সা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। তিনি সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘প্রয়োজনে সৌদি ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে লড়াই করবেন, তবুও মেসিকে বার্সায় ফেরত আনবো আমরা। এমনকি বিষয়টা যদি অর্থনৈতিকভাবে মিল নাও থাকে।’
মেসিকে পেতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মিয়ামিও। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে মেসিকে আবারও ন্যু ক্যাম্পে ফিরিয়ে নিতে চান লাপোর্তা। রোববার ২৭তম লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর টিভি-থ্রিকে তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের প্রতি সব ধরনের সম্মান রেখেই বলছি- যেখানে হয়তো অনেক ভালো কাজ হবে, অনেক টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে- কিন্তু বার্সা তো বার্সাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘বার্সা হচ্ছে তার বাড়ি। এ কারণে বার্সা যে কারো সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত। এই ক্লাবের একটি বিশাল অতীত আছে এবং অনুভব করি, আমাদের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন সমর্থক রয়েছে, যাদের কারণে আমরা খুবই শক্তিশালী।’
মধ্যপ্রাচ্য থেকে মেসি যে পরিমাণ আয় করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, বার্সেলোনার অর্থনৈতিক অবস্থা এমন যে- তারা এর ধারেকাছেও হয়তো যেতে পারবে না। বিশেষ করে লা লিগা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বার্সার ওপর যে অর্থনৈতিক লিমিট রয়েছে, তা দিয়ে মেসিকে আনা সম্ভব নয়।
কিন্তু তবুও বার্সা ম্যানেজমেন্ট খুব আশাবাদী, মেসিকে তারা আবার পেতে যাচ্ছে। এমনকি এ নিয়ে তারা লা লিগা কর্তৃপক্ষের কাছেও যাবে, যাতে করে তারা মেসিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এই ফাইনান্সিয়াল রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন শিথিল করে।
লাপোর্তা বলেন, ‘ক্লাব খুব কঠোর এক পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। যে কারণে আমরা আগামী মৌসুমে একটি প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক দল তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমরা তাকিয়ে আছি লা লিগা কর্তৃপক্ষের দিকে, যেন তারা আমাদের এই কার্যকর পরিকল্পনাটি অনুমোদ দেয়।
বার্সার হয়ে ৭৭৮টি ম্যাচ খেলে ৬৭২ গোল করেছেন মেসি। লাপোর্তার সঙ্গে তার সমর্কটা ভেঙে গেছে, ২০২১ সালে তিনি যখন বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে গিয়ে যোগ দেন তখন।
তবে বার্সা সভাপতি বলেন, ‘আমি সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা বলেছি। তার সামনে পুরো পরিস্থিতি তুলে ধরে সব ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেছি। তাবে জানিয়েছি যে, সব কিছুর আগে আমাকে ক্লাব নিয়েই চিন্তা করতে হয়। এমনকি তিনি যে বিশ্বসেরা ফুটবলার, এরপরও। তবে তার সঙ্গে খুব ভালো কথা-বার্তা হয়েছে। আশা করছি, তার সঙ্গে সম্পর্কটা উন্নতি হবে। দীর্ঘদিন যে সম্পর্কটা ছিল, সেটা ফিরে আসবে।’
পিএসজি সমর্থক কর্তৃক মেসিকে ধুয়ো ধ্বনি দেয়া, তাকে নিয়ে অপমানসূচক কথাবার্তা বলাকে খুবই খারাপ চোখে দেখেন লাপোর্তা। তিনি বলেন, এমন কিছু দেখাটাও অস্বস্তিকর।