মেট্রোরেল যুগে বাংলাদেশ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

মেট্রোরেলের উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার অংশ উদ্বোধন হচ্ছে আজ, এরমধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক ট্রেন যুগে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হচ্ছে। পদ্মা সেতুর পর মেট্রোরেল চালুর মাধ্যমে রাজধানীর যানজট কমার পাশাপাশি রাজস্ব আহরণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পরবর্তীতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশ এবং তৃতীয় অংশ অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে বলে তারা জানান।

মেট্রোরেল প্রকল্পের পরিকল্পনা
গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মেট্রোরেল নির্মাণে জাপানের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। পরের বছর প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল ডিপো স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে চলে কার্যক্রম।

এমআরটি লাইন-৬ এ এখন পর্যন্ত পাঁচটি ঋণচুক্তি হয়েছে। প্রথম দুটি ঋণচুক্তির সুদ দিতে হবে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ। প্রথম দুই অংশে (পার্ট) চুক্তি হওয়া ঋণ ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (১০ বছর সুদ বা আসল কিছুই দিতে হবে না) ৪০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। পরের তিনটি ঋণের সুদ দিতে হবে যথাক্রমে ১, ০.৬৫ ও ০.৭ শতাংশ। এই তিন ঋণচুক্তির গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর হলেও ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে ব্যয় সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

জাপান সরকারের অর্থায়নে রাজধানীবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। প্রথমে কথা ছিল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল স্থাপন করা হবে। সে হিসেবে এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মেট্রোরেলের দূরত্ব আরও ১.১৬ কিলোমিটার বাড়িয়ে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। ফলে বর্তমানে মেট্রোরেলের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। নতুন করে ১.১৬ কিলোমিটারের জন্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে, মতিঝিল ছাড়িয়ে মেট্রোরেলের রুট কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করায় প্রকল্পের কাজ যেমন বেড়েছে, তেমনি পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করতে আরও প্রায় এক বছর সময় বেশি লাগবে বলে জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে প্রকল্পটি শেষ করতে সময় লাগবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উড়ালপথে মেট্রোরেলের মোট ১৭টি স্টেশন থাকবে। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সাতটি এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত একটি স্টেশন রয়েছে।

প্রথমে কথা ছিল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল স্থাপন করা হবে। সে হিসাবে এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মেট্রোরেলের দূরত্ব আরও ১.১৬ কিলোমিটার বাড়িয়ে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। ফলে বর্তমানে মেট্রোরেলের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। নতুন করে ১.১৬ কিলোমিটারের জন্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে

জাপান সরকারের ঋণ সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে মেট্রোরেলের মোট ব্যয় ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকার অর্থাৎ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে জাপান সরকারের ঋণ ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। পরবর্তীতে বাড়ানো ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার মধ্যে জাইকার ঋণ থেকে পাওয়া যাবে তিন হাজার ৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা। বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে খরচ করা হবে।

মেট্রোরেলের ভাড়া কত
মেট্রোরেলের ভাড়া কিলোমিটারে ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বনি¤œ ভাড়া ২০ টাকা। সেই হিসাবে উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা। আর উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে একজন যাত্রীকে ১০০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে।

যেভাবে টিকিট ক্রয়
মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য প্রথমদিকে কেবল স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে এবং সেটি পরবর্তীতে রিচার্জ করা যাবে। এর বাইরে স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকিট বিক্রির মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকিট (সিঙ্গেল জার্নি টিকিট) কেনা যাবে। দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করবেন। প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করবেন।

উত্তরা থেকে ছাড়বে ১০টি ট্রেন, স্ট্যান্ডবাই থাকবে দুটি
ডিএমটিসিএলের জনসংযোগ কর্মকর্তা আফতাব মাহমুদ গালিব বলেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১০টি ট্রেন চলবে। দুটি ট্রেন সবসময় প্রস্তুত থাকবে। ১০টি ট্রেনের মধ্যে যদি কোনোটির সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে বাকি দুটি সাপোর্ট হিসেবে কাজ করবে। আপাতত সময় নিয়ে অর্থাৎ ধীরে-সুস্থে এই রুটে ট্রেন চলাচল করবে। তবে, পুরোদমে ট্রেন চালু হলে সাড়ে তিন মিনিটে একটি করে ট্রেন চলাচল করবে। স্টেশনে ট্রেন কতক্ষণ দাঁড়াবে তা আপাতত নির্ধারণ করা হয়নি। প্রত্যেক স্টেশনে যাত্রীদের ওঠা-নামা শেষ হওয়া পর্যন্ত ট্রেন অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন দুই হাজার ৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারবে। তবে, যেসব এলাকায় বাঁক আছে সেখানে গতি কম থাকবে।

জাইকার ঋণে সুদ কত
এমআরটি লাইন-৬ এর আওতায় পাঁচটি প্যাকেজে ঋণ দিয়েছে জাপান সরকার। পাঁচটি প্যাকেজেই আলাদা শর্তে বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ নিতে হয়েছে। মেট্রোরেলের এই ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ সরকার সময় পাবে ৩০ থেকে ৪০ বছর। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে ঋণের ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা জাইকাকে পরিশোধ করবে সরকার।

মেট্রোরেলের ভাড়া কিলোমিটারে ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বনি¤œ ভাড়া ২০ টাকা। সেই হিসাবে উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা। আর উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে একজন যাত্রীকে ১০০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জাপান অধিশাখার যুগ্ম-সচিব খাদিজা পারভীন বলেন, এমআরটি লাইন-৬ এ এখন পর্যন্ত পাঁচটি ঋণচুক্তি হয়েছে। প্রথম দুটি ঋণচুক্তির সুদ দিতে হবে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ। প্রথম দুই অংশে (পার্ট) চুক্তি হওয়া ঋণ ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (১০ বছর সুদ বা আসল কিছুই দিতে হবে না) ৪০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। পরের তিনটি ঋণের সুদ দিতে হবে যথাক্রমে ১, ০.৬৫ ও ০.৭ শতাংশ। এই তিন ঋণচুক্তির গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর হলেও ঋণ পরিশোধ করতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে।

ঋণ পরিশোধ করবে ইআরডি
মেট্রোরেল নির্মাণে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। যেহেতু জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি ইআরডি করেছে, সেহেতু ঋণের টাকাও তাদের পরিশোধ করতে হবে। তবে, জাইকাকে ইআরডি টাকা পরিশোধ করলেও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে সেই টাকা অর্থ বিভাগকে পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ সরকার কীভাবে এই ঋণ পরিশোধ করবে— এমন প্রশ্নে যুগ্ম-সচিব খাদিজা পারভীন বলেন, প্রথম ঋণচুক্তির ১০ বছর পর থেকে জাইকাকে টাকা পরিশোধ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ইআরডির মাধ্যমে জাপান সরকারকে টাকা পরিশোধ করবে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জাইকাকে যে টাকা পরিশোধ করবে তা অর্থ বিভাগকে দিতে হবে।
৪০ বছরে আমরা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারব। আগামী ৩০ বা ৪০ বছর পর্যন্ত আমাদের দেশের অর্থনীতি একই রকম থাকবে না। এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়বে, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে। তাছাড়া, মেট্রোরেল থেকেও আমাদের ভালো আয় হবে। সবমিলিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধে আমাদের বেগ পেতে হবে না।

খরচ কত দিনে উঠবে
মেট্রোরেল নির্মাণের খরচ কতদিনে উঠবে এমন প্রশ্নে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, এ হিসাব এখন আমার কাছে নেই। উদ্বোধনের পর এ বিষয়ে কথা বলব।

প্রতিদিন মেট্রোরেল থেকে কত টাকা আয় হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখন বলতে পারব না। মেট্রোরেল চালুর পর বলতে পারব। তবে, আমরা আশা করছি দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করবেন। প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করবেন। কেবল এ তথ্যই আমার কাছে আছে। ট্রেন চালুর পর সঠিক তথ্য জানা যাবে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মেট্রোরেল গণপরিবহনে নতুন মাত্রা যুক্ত করবে। সাধারণ মানুষ দারুণ উপকৃত হবেন এবং সড়কের ওপর চাপ কমবে। মেট্রোরেল উদ্বোধন হচ্ছে এটা ভাবতে আমার ভালো লাগছে। আমি খুবই আনন্দিত। কারণ, আমাদের আরও বেশি গণপরিবহন প্রয়োজন। প্রয়োজনের তাগিদেই গণপরিবহনে মেট্রোরেল যুক্ত হচ্ছে। আধুনিক গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেল নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটা আমাদের বাড়তি পাওয়া।

মনে রাখতে হবে, একটু স্বস্তি বা ঝামেলামুক্তভাবে বাজার করার জন্য যিনি সুপার শপে যান তিনি সুবিধা মতো ফুটপাত থেকেও একই জিনিস কিনতে পারেন। কিন্তু যিনি কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য ফুটপাত থেকে বাজার করেন তার কাছে সুপার শপের শীতল পরিবেশ বা আরাম মুখ্য নয়। মেট্রোরেল একটি গণপরিবহন, আমরা যেন একে সুপার শপ সেবায় পরিণত না করি।

ঋণ নিয়ে করা মেট্রোরেল আমাদের জন্য চাপ হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেকোনো ধরনের ঋণই চাপ। তবে, বুঝে-শুনে যদি সঠিক জায়গায় ঋণের অর্থ ব্যবহার করা যায় তাহলে সেটার সুফল পাওয়া যায়। ঋণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ঋণের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক উত্তরণ হয়। যারা ঋণটা যথাযথ ব্যবহার করে তারাই বেশি লাভবান হবে।

ঋণ পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ৪০ বছরে আমরা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারব। আগামী ৩০ বা ৪০ বছর পর্যন্ত আমাদের দেশের অর্থনীতি একই রকম থাকবে না। এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়বে, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে। তাছাড়া, মেট্রোরেল থেকেও আমাদের ভালো আয় হবে। সবমিলিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধে আমাদের বেগ পেতে হবে না।

মেট্রোরেলের মতো একটি ব্যয়বহুল প্রকল্পে আদৌ সুফল মিলবে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেন, এই প্রকল্পের সফলতা নির্ভর করছে কত বেশি গণমানুষকে এখানে সম্পৃক্ত করা যাচ্ছে তার ওপর। গণমানুষকে সম্পৃক্ত করার কার্যকর একটা মাধ্যম হলো সহনশীল এবং অন্যান্য বিকল্প মাধ্যমের তুলনায় সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাড়া নির্ধারণ।

‘এক্ষেত্রে অল্প লাভ রেখে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়িয়ে ব্যবসায়িকভাবে যেমন সরকার লাভবান হতে পারে তেমনি যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে এটি। এছাড়া ছুটির দিনে ভাড়া অর্ধেক নির্ধারণ করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, একটু স্বস্তি বা ঝামেলামুক্তভাবে বাজার করার জন্য যিনি সুপার শপে যান তিনি সুবিধা মতো ফুটপাত থেকেও একই জিনিস কিনতে পারেন। কিন্তু যিনি কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য ফুটপাত থেকে বাজার করেন তার কাছে সুপার শপের শীতল পরিবেশ বা আরাম মুখ্য নয়। মেট্রোরেল একটি গণপরিবহন, আমরা যেন একে সুপার শপ সেবায় পরিণত না করি।’