মেগা প্রকল্পের সুফল পেতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা দরকার

গোলটেবিল বৈঠকে মাহবুবুল আলম

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলকে ঘিরে যে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে তার পরিপূর্ণ সুফল পেতে হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা দরকার। মিরসরাইয়ে দেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের কোন বিকল্প নেই।

তিনি গতকাল সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু টানেল : এ লিপ টুয়ার্ডস ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সক্ষমতা তৈরি হওয়ায় জাপানসহ বিভিন্ন দেশ চট্টগ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে লক্ষ্য করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কর্ণফুলীর অপর পাড়ে নগরায়নের পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত গড়ে উঠবে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

বিশেষ করে বিনিয়োগকারীরা ঢাকা হতে এক-দেড়ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বিমানযোগে এসে পুনরায় চট্টগ্রাম হতে আরো দুই ঘণ্টায় মিরসরাই যেতে চাইবেন না। এজন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে করা গেলে মাত্র দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে মিরসরাই শিল্পনগরে আসা যাবে যা দেশের অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, টানেল যুগে প্রবেশ করছে চট্টগ্রাম। এই টানেল দেশের পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং ভারতের সেভেন সিস্টারস এর মধ্যে সংযোগ হিসেবে কাজ করবে। পদ্মা সেতু যেমন দেশের জিডিপিতে অবদান রাখছে তেমনি এই টানেলও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন-নদীর তলদেশে টানেল এখন আর স্বপ্ন নয়; দৃশ্যমান বাস্তবতা। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পদ্মা সেতুর পর দেশীয় সক্ষমতার অন্যতম দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে চট্টগ্রামের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সাথে চট্টগ্রাম বন্দর, মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যে সংযোগ রচিত হচ্ছে তা চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটিতে রূপান্তরিত করবে।

চেম্বার সহসভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন, নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সবাইকে সচেতন করা। দেশে বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পগুলোর কিভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে তা সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে ব্যবসায়ী সমাজকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

প্যানেল আলোচকবৃন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল দেশের সক্ষমতার ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করবে। এই টানেলের পরিপূর্ণ সুফল পেতে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে গড়ে তুলতে হবে পরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন। সহজ শর্তে শিল্প প্লটসমূহকে বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে দ্রুত বরাদ্দ প্রদান করে নিশ্চিত করতে হবে সকল অবকাঠামোগত সুবিধা। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়াতে দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য বেসরকারি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। কারণ দক্ষিণ প্রান্তে শিল্পায়ন হলে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের পরিমাণ আরো বাড়বে।

চিটাগং চেম্বার প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন চেম্বার সহসভাপতি রাইসা মাহবুব, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চুয়েট উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (ফাইন্যান্স) মোহাম্মদ শহিদুল আলম, চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, বিকেএমইএ’র সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী, রিহাব সহসভাপতি মো. আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, আইইবি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ, আইএবি-চট্টগ্রাম চেয়ারম্যান আশিক ইমরান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক সদস্য জাফর আলম, বিএসআরএম চেয়ারম্যান আলীহুসেইন আকবর আলী, টোয়াব সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী, লুব-রেফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ ও আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থার উপদেষ্টা সিরাজুল হক। বিজ্ঞপ্তি