৪৭১ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার
রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া :
পাশর্^বর্তী দেশ মিয়ানমারে অনৈতিক আগ্রাসন থেমে নেই। বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, ডিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানসহ গোয়েন্দা সংস্থা ওপার থেকে চোরাইপথে আসা ইয়াবাচালান ও ইয়াবা কারবারিদের গ্রেফতার করে তাদের পূর্বপরিকল্পিত নগ্ন হস্তক্ষেপ নস্যাৎ করে দিতে সমর্থ হয়েছে। এখন তারা স্বর্ণপাচারের মাধ্যমে এদেশের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, গত রোববার রাতে গোপনসূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে ঘুমধুম বিজিবি’র সদস্যরা পালংখালী ইউনিয়নের কুড়ারপাড়া এশিয়ান হাইওয়েস্থ ব্রিজের পাশে ওৎ পেতে অবস্থান নেয়। এ সময় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮, বি৪৭-এর বাসিন্দা কবির আহমদের ছেলে মো. কলিম (২১) একটি পুটলি নিয়ে ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। বিজিবি তাকে আটক ও দেহতল্লাশি করে ওই পুটলি উদ্ধার করে। পরে ওই পুটলির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ৪৭১ ভরি ৯ আনা ৪ রতি পরিমাণের স্বর্ণালংকার। যার আনুমানিক বাজার মূল্য তিন কোটি পনের লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার আট শ ঊনসত্তর টাকা। ধৃত স্বর্ণ চোরাকারবারিকে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে ঘুমধুম কচুবনিয়া এলাকা দিয়ে একজন রাখাইন ভান্তে ২ জন সহযোগীসহ সীমান্ত পার হয়ে ঘুমধুম এলে বিজিবি তাদের আটক করে। পরে তাদের দেহতল্লাশি করে বেশ কিছু স্বর্ণালংকার, মানচিত্র ও ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়। রোহিঙ্গাদের তথ্যমতে স্বর্ণ উৎপাদনের দেশ মিয়ানমারে অহরহ স্বর্ণ উৎপাদন হলেও তারা ওইসব স্বর্ণ রপ্তানি করে না। এসব স্বর্ণ দিয়ে তারা বিভিন্ন ধাঁচের অলংকার ও বৌদ্ধমূর্তি নির্মাণ করে এবং তা বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে ব্যবহার করে থাকে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা মাঝি জানালেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গারা যখন দেশ ছেড়ে এপারে চলে আসছিল তখন তাদের কাছে থাকা স্বর্ণলংকারসমূহ বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখে চলে আসে। পরে এসব জায়গায় মিয়ানমার সেনারা স্থাপনা তৈরি করতে গিয়ে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার। এসব স্বর্ণালংকার সে দেশের সেনাসদস্যরা চোরাইপথে বিক্রি করে দিলে তা রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে এদেশে পাচার হয়ে আসে। স্বর্ণপাচার হয়ে আসার বিষয়টি দীর্ঘদিনের হলেও তা কোনো দিন প্রকাশ করা হয়নি। বর্তমানে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে স্বর্ণপাচার হয়ে আসছে। আর এসব স্বর্ণবিক্রির টাকা চলে যাচ্ছে মিয়ানমারেই। এভাবে এদেশের কোটি কোটি টাকা মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন।