রাজু কুমার দে, মিরসরাই :
মিরসরাইয়ে ধীরে ধীরে বাড়ছে লেবু চাষ। গত বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ৪০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়েছিল। চলতি বছর চাষ হয়েছে ৪৫ হেক্টর জমিতে। এ বছরের ব্যবধানে লেবু চাষ বেড়েছে ৫ হেক্টর। উপজেলা কৃষি অফিসের তদারকি ও কৃষকদের আগ্রহে এই উপজেলায় ধীরে ধীরে লেবু চাষ বাড়ছে বলে দাবি করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা।
মিরসরাই কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাইয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে এবছর ৪৫ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে। শুধু করেরহাট ইউনিয়নের চাষ হয়েছে ২২ হেক্টর লেবু।
সরেজমিনে করেরহাট ইউনিয়নের কালাপানি ও সাইবেনীখীল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাসত্মার ধারে পাহাড়ের পাদদেশে সারি সারি লেবু বাগান।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা ছুটে এসেছে লেবু কিনতে।
লেবু কেনার জন্য বাগানের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী ঘর। পাইকাররা ওই ঘরে বসে চাষিদের সাথে সওদা করছেন। প্রতিদিন এসব স্থানে কয়েক লাখ টাকা লেবু বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বড় বাজারে দৈনিক আরো কয়েক লাখ টাকার লেবু বিক্রি হয়ে থাকে।
সাইবেনীখীল এলাকার সফল লেবু চাষি ঊষা ত্রিপুরা জানান, প্রায় ১২ বছর আগে ২০০টি কলবী লেবুর চারা গাছ কিনে রোপন করেছিলেন উষা ত্রিপুরা। প্রত্যেকটি চারা গাছে দাম পড়েছিল ১০ টাকা। গাছগুলো লাগানোর ২ বছর পর থেকে ফলন দেয়া শুরু করে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা এসে তার কাছ থেকে লেবু কিনে নিয়ে যায়। লেবু চাষ করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। তিনি ৩ একর জমিতে লেবু চাষ করেছেন। চলতি বছর প্রায় ১ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন। এছাড়া বাগানে কয়েক লাখ টাকার লেবু রয়েছে। প্রতি বসত্মা লেবু বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। এক বসত্মায় ৯০০ লেবু থাকে। লেবু বাগানে পানি দেয়ার জন্য কিনেছেন পাম্প মেশিন।
কুমিলস্নার লাকসাম থেকে আসা লেবু ক্রেতা মোতালেব জানান, করেরহাট ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত লেবুর সুনাম রয়েছে। তিনি ঊষা ত্রিপুরা থেকে বসত্মা ভর্তি লেবু কিনে কুমিলস্না শহরসহ বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করে থাকেন। এখানে তার মতো অনেক পাইকার লেবু কিনতে আসে বলে জানান তিনি।
মিরসরাই কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা জানান, মিরসরাইয়ে সবচেয়ে বেশি লেবু চাষ হয় করেরহাট ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলে। এবছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে। লেবু চাষে বাগান স্থাপনে খরচ বেশি। তবে বাগান তৈরি হয়ে গেলে খরচের তুলনায় বেশি লাভ হয়।