রাজু কুমার দে, মিরসরাই »
সরকারি নিদের্শনা অনুযায়ী গত ১৯ আগস্ট থেকে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। সারা দেশের মতো মিরসরাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোও খুলেছে। কিন্তু মিরসরাইয়ের ব্যক্তিমালিকানাধীন ১টি ও সরকারি ইজারাকৃত ২টি পর্যটন কেন্দ্রে কমেছে পর্যটক।
ফলে ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ইজারাদার। এছাড়া কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পার্কের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না আরশিনগর পিউচার পার্কটির মালিক নাসির উদ্দিন দিদার। লকডাউন পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষের আর্থিক সংকটের কারণে পর্যটক সংখ্যা কমেছে বলে জানান পর্যটন কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মিরসরাইয়ে ৮টি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত আরশিনগর পিউচার পার্কটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। অন্য ৭টির মধ্যে দূর্গাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মহামায়া ইকো পার্ক ও বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যান প্রত্যেক বছর ইজারা দেয়া হয়। বাকিগুলো ৫টি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছর মহামায়া ইকো পার্কটি ভ্যাটসহ প্রায় ৯০ লাখ টাকা দিয়ে ইজারা নেন এ এইচ এন্টারপ্রাইজ। এছাড়া বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যানটি প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকায় মের্সাস রেড চিলি এন্টারপ্রাইজকে ইজারা দেয়া হয়। আগামী বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারিতে মহামায়া ইকো পার্কের ইজারা মেয়াদ শেষ হবে। অন্যদিকে চলতি বছরের ২০ আগস্ট বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যানের ইজারা মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে বনবিভাগ লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে কয় মাস পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ছিল সেই সময়ের জন্য নতুন করে ইজারার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে।
এ বিষয়ে মহামায়া ইকো পার্ক ও বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যানের ইজারাদার নাজমুল হাসান পিন্টু জানান, মহামায়া ইকো পার্কের ইজারা মেয়াদ আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। তবে মেয়াদ শেষ হলেও নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে শীতের মৌসুম পাবেন। তাই মহামায়াতে তার আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু সাড়ে ১২ লাখ টাকায় ইজারা নেয়া বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে তিনি মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতি সম্মুখীন হবেন। কারণ বারইয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে রয়েছে খৈয়াছরা ঝর্ণা।
বর্ষা মৌসুম চলে গেলে ঝর্ণার পানি শুকিয়ে যায়। তাই মেয়াদ বৃদ্ধি করলেও বর্ধিত মেয়াদে কোন পর্যটক ঝর্ণা দেখতে আসবে না।
এদিকে মিরসরাইয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র আরশিনগর পিউচার পার্ক। প্রবেশ মূল্য একশ টাকা ধার্য করা হলেও লডকাউন পরবর্তী সময়ে আর্থিক সংকটের কারণে কমেছে পর্যটক। পার্কটিতে প্রায় ২৫০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন। বিগত এক বছরেরও বেশি সময়ে এসকল কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন ও বিভিন্ন খরচ বাবদ প্রায় তিন কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেন পার্কের মালিক নাসির উদ্দিন দিদার।
আরশিনগর পিউচার পার্কের মালিক নাসির উদ্দিন দিদার জানান, বিগত করোনাকালে দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকার মতো মিরসরাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমনি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরশিনগর পিউচার পার্ক। গত দেড় বছরে পার্কের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ও বিভিন্ন খরচ বাবদ তার প্রায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। তাই তিনি পর্যটন কেন্দ্রের ইজারাদার ও মালিকদের জন্য প্রণোদনা দাবি করেন।