নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই
বেশ কিছু শর্ত দিয়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই গণপরিবহন চালু করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। শর্তগুলো হলো, প্রতি আসনে একজন যাত্রী বসবে, ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়বে, আসনে জীবাণুনাশক ছিটাতে হবে। কিন্তু মিরসরাইয়ে এসব শর্তাবলীর কোনোটাই মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশপথ মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট-চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক কয়েকশ যাত্রীবাহী পবিবহন চলে। এসব পরিবহনে যাতায়াত করে শত-শত যাত্রী। এছাড়া বারইয়ারহাট-সীতাকু- রুটেও দৈনিক ৮০টি হিউম্যানহলার চলাচল করে। বারইয়ারহাট-ফেনী রুটে আনন্দ সুপার নামে অর্ধশত যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করে। এছাড়া বারইয়ারহাট-চট্টগ্রাম রুটে ‘চয়েস সার্ভিস’ নামে অর্ধশত যাত্রীবাহী বাসও চলাচল করে থাকে। এসব পরিবহনের প্রতি আসনে একজন যাত্রী বসে। ভাড়াও নেয়া হয় ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে। কিন্তু জীবাণুনাশক ছিটানা হয় না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। অন্যদিকে ওই রুটে প্রতিদিন ‘উত্তরা সার্ভিস’-এর শতাধিক পরিবহনও চলছে। কিন্তু উত্তরা সার্ভিসে ভাড়া নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধিও। মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার। বিভিন্ন কাজে এতদঞ্চলের শত শত মানুষ চট্টগ্রাম শহরে আসা-যাওয়া করে প্রতিনিয়ত।
বারইয়ারহাট থেকে সীতাকু-গামী উত্তরা সার্ভিসের যাত্রী গৃহবধূ কলি দাশ জানালেন, তিনি সীতাকু-ে আত্মীয় বাড়ি যাবার জন্য ওই বাসে ওঠেন। আগে বারইয়ারহাট থেকে সীতাকু-ের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ৬০ টাকা। সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করলেও উত্তরা সার্ভিস ভাড়া নিচ্ছে দ্বিগুণ। এছাড়া এখানে এক আসনে দুজন বসানো হচ্ছে। মানা হয় না স্বাস্থ্যবিধিও।
সরেজমিন উত্তরা সার্ভিসের যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বারইয়ারহাট থেকে মিরসরাইয়ের নির্ধারিত ভাড়া ১০ টাকা। ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করলে হয় ১৬ টাকা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। এভাবে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও যাত্রীরা ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। আসন করা হয় না জীবাণুমুক্ত। যাত্রীদের হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় না। এদিকে সরকারিভাবে যানবাহনগুলোতে অভিযানও চালানো হয় না। তাই চালক ও যাত্রী কেউই সচেতন হচ্ছে না। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়েই চলছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চয়েস মালিক জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ৬০ শতাংশ বৃদ্ধিতে ভাড়া আদায় করছে চয়েস সার্ভিস। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসনে একজন যাত্রীই বসানো হচ্ছে। আসন জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
চট্টগ্রাম জেলা বাস-মিনিবাস-হিউম্যানহলার শ্রমিক ইউনিয়ন বারইয়ারহাট শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফ উদ্দিন মাসুক জানান, দ্বিগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে না। তবে যাত্রীরা অনেক সময় জোর করে এক আসনে দুজন বসে পড়েন।
চট্টগ্রাম জেলা বাস-মিনিবাস-হিউম্যানহলার মালিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিক উদ্দিন জানান, দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে পরিবহন শ্রমিকদের সরকারের বেধে দেয়া নিয়মের মধ্যে থেকে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।