জিয়াবুল হক, টেকনাফ »
পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সংঘাতকে কেন্দ্র করে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়কারী টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ধসে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার-টেকনাফ স্থল বন্দরের জেটি ফাঁকা পড়ে আছে। আগের মত মাল বোঝাই জাহাজ বন্দরে নেই বললে চলে। কার্যক্রম কমে যাওয়ায় বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন।
জানা যায়, টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানি করে প্রতিমাসে সরকারকে ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব দেয়।
কিন্তু বিদায়ী বছরের ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর মিয়ানমারে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে, ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি ধীরে ধীরে নিম্ন মাত্রায় নেমে আসে। সেই সূত্রে গত বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে ৩৫০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
তিন মাস আগে টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে নেমে আসে ধস। বন্দরের জাহাজ ঘাট গুলোতে বিরাজ করছে শুন্যতা। দিন দিন কমতে শুরু করেছে রাজস্বের ঊর্ধ্বগতি।
এ বিষয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমারে সৃষ্ট হওয়া সংঘাতের কারণে ১৪ নভেম্বর থেকে উক্ত রাজ্য থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আসা একে বারেই কমে গেছে। ঠিক একইভাবে টেকনাফ থেকে কোন পণ্য মিয়ানমারে রপ্তানি করা যাচ্ছেনা।
এ ব্যপারে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক (সিআইপি) জানান, ১৪ নভেম্বর থেকে মিয়ানমারে লাগাতার সংঘাত শুরুর পর থেকে বন্দরের ব্যবসায়ীরা আগের মত আমদানি-রপ্তানি করতে পারছেন না। গত তিন মাস ধরে উক্ত বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ধসে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বন্দরে যে মালামাল আমরা আমদানি করছি তা সম্পূর্ণ ব্যবসায়ীরা নিজেরা ঝুঁকি নিয়ে আমদানি করছে। আমরা উক্ত বন্দর থেকে প্রতিমাসে রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা তা পূরণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছি।
স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা আলী আজগর মাঝি বলেন, বন্দরে মালামাল ওঠা-নামার কাজ এক বারেই কমে গেছে। এতে বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা পড়েছে বিপাকে।
রাজস্বের ঊর্ধ্বগতি কমে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা এ,এস,এম মোশাররফ হোসেন বলেন, গত তিন মাসে গড়ে ৩৫০ কোটি টাকার অধিক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে বন্দর।
মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসন না হলে উক্ত বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে প্রতিমাসে সরকার হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা যে মালগুলো মিয়ানমার থেকে আমদানি করছে সেই মালগুলোও বন্দরে প্রবেশ করছে অনেক ঝুঁকি নিয়ে।