মাতারবাড়ি বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার

প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। কালুরঘাট সেতু নির্মাণে ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার নতুন প্রকল্পের অনুমোদন

সুপ্রভাত ডেস্ক »

প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন কোনো অগ্রগতি না থাকলেও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন নির্মাণকাজে ব্যয় বেড়েছে আরও সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক নির্মাণেও ব্যয় বেড়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর শের-ই বাংলা নগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভা শেষে এ তথ্য জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, অপচয় কমানোর বিষয়ে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেনা শত শত গাড়ি কোথায় আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে বলা হয়েছিল, মাতারবাড়ি বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গেম চেঞ্জার হবে। এই বন্দরে জোয়ার-ভাটায় যেকোনো সময়ে আট হাজার টিইইউএসের জাহাজ ভিড়তে পারবে। প্রথম দফায় ব্যয় বাড়িয়ে এর খরচ ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮০৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কিন্তু, ২০২০ সালে নেয়া এই প্রকল্পের চ্যানেল নির্মাণ ছাড়া কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। টার্মিনালের কাজে হাতই দেয়া হয়নি এখন পর্যন্ত। এরমধ্যেই প্রকল্পটি আবারও অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় এবং চলতি অর্থবছরের তৃতীয় একনেক সভার আলোচনার টেবিলে উঠেছে।

নথি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মাত্র চার শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে। এর অর্থ হলো, তেমন কোনো কাজই শুরু হয়নি প্রকল্পটিতে। সেখানে আবারও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৬ হাজার ৫৭৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে এখন এই প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২৮১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানকে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘জাপানি অর্থায়নই বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ।’

এছাড়াও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সড়ক ও রেল যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করতে কর্ণফুলী নদীর উপর কালুরঘাট সড়ক ও রেল সেতু নির্মাণে নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। আর এতে খরচ ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।

এদিকে, ঢাকা-রংপুর চারলেন মহাসড়কের কাজ শেষে হয়েছে টাঙ্গাইল পর্যন্ত। বাকি কাজের জন্য ৩৭৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে এলেঙ্গা-হাঁটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন করা হয়। সভায় সবমিলিয়ে ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।

এনইসি সভাকক্ষে একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বিপুল পরিমাণে কেনা সরকারি গাড়িগুলো কোথায় কি অবস্থায় আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রকল্প ব্যয় কমে গেলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। অপরাজনীতির অপচয়গুলো এখনও আছে। এগুলো কমাতে হবে। বিদেশি অর্থায়ন হলেও সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে এগুচ্ছে সরকার।’

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, বেসরকারি বিনিয়োগ কম থাকায় বাড়ছে না কর্মসংস্থান। প্রকল্প বাস্তবায়নে যেসব বিদেশি ঋণ নেয়ার কথা ভাবছে সরকার, সেগুলো সহজ শর্তে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।