মশার লার্ভা বেড়েছে নগরে : কী করবে চসিক

মশার বিস্তার ও মশাবাহিত রোগের ওপর শেষ গবেষণাটি করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। চলতি জুলাই মাসে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এডিস মশাবাহী রোগের জন্য চট্টগ্রাম নগরকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত বছর চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের এক জরিপ পরিচালনা করে। তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায়, এবার এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটোই বেড়েছে।
চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ২০২৪ সালে ৩৬ শতাংশ ছিল। এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় লার্ভার ঘনত্ব পাওয়া গেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান হচ্ছে ২০ শতাংশ। এর বেশি হলে তাকে মশাবাহিত রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।এবার সর্বোচ্চ ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত ক্রটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে নগরের আগ্রাবাদে। কিন্তু গত বছর সর্বোচ্চ ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ৮০ শতাংশ পর্যন্ত এবং তা বহদ্দারহাটে।এবার বাসাবাড়িতে মশার লার্ভার উপস্থিতিও বেড়েছে। ২০২৪ সালে জরিপে ২০০টি বাড়ির মধ্যে ৭৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল, যা ৩৭ শতাংশ। এবার ১২৮টি বাড়ির মধ্যে ৬২টিতে লার্ভা পাওয়া গেছে, যা ৪৮ শতাংশের বেশি।
মশার বিস্তারের কারণে এবার ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুই ধরনের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া এরই মধ্যে তিনজনের জিকাও শনাক্ত হয়েছে। গত রোববার পর্যন্ত চলতি বছরে ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত করা গেছে। ডেঙ্গুতে মারা গেছেন আটজন। এর মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

আইইডিসিআরের জরিপে এবার তিনটি সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে মশা নিধন অন্যতম। এর আগের বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জরিপে আটটি সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সকাল ও বিকেলে দিনে দুবার করে ফগিং করার সুপারিশ ছিল।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া ডেঙ্গুর চেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মশা নিধনে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় এ রোগের বিস্তার বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ব্যাপারে চসিক তথা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বক্তব্য গতানুগতিক। তাদের প্রশ্ন করলেই বছরের পর বছর একই উত্তর দিয়ে থাকেন। অথচ বাস্তবে নাগরিকেরা থাকেন উৎকণ্ঠায়। একদিকে করোনা অন্যদিকে ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, জিকা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েডের মতো অসুখের বিস্তৃতি ঘটছে। এমন পরিস্থিতি থেকে মানুষ বাঁচতে চায়।