সুপ্রভাত ডেস্ক »
দেশে মধ্যবিত্তদের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু রাজনীতিতে কোনো নেতৃস্থানীয় পদে তারা নেই এবং সমাজে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এমনই মন্তব্য করেছেন আলোচকরা।
আলোচনায় বক্তারা উল্লেখ করেন, ৬০ এর দশকে মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ ছিলেন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সদস্য। দেশে দারিদ্র্যের হার কমতে থাকায় ৩০ শতাংশ মানুষ এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিত্তবান মানুষরাই রাজনৈতিক নেতা হচ্ছেন। যারা রাজনীতিতে যোগ দেন, তাদের অনেকেই খুব দ্রুত বিত্তবান হন।’
তিনি আরও বলেন, মধ্যবিত্ত বলতে সেই ধরনের মানুষের কথা বলা যায়, যারা জ্ঞানপিপাসু ও চিন্তাশীল, যারা জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং যারা একটি উচ্চ পর্যায়ের নৈতিকতাপূর্ণ সমাজ গঠনে নেতৃত্ব দেন।
‘বুদ্ধিবৃত্তি, চিন্তাশীলতা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ছাড়া শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেই একটি উন্নত সমাজ গঠিত হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
সমাজে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের অপ্রতুল বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানের পেছনের কারণ হিসেবে শিক্ষার মান কমতে থাকার বিষয়টিকে চিহ্নিত করা যায় বলে মনে করেন ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদ।
শিক্ষিত ও মেধাবীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবনের সব ক্ষেত্রে মেধার যথেষ্ট মূল্যায়ন নেই।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন জানান, ৬০ এর দশকে জনসংখ্যার ৫ শতাংশ ছিলেন মধ্যবিত্ত। কিন্তু সেই আমলের মধ্যবিত্তরা ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ আর্কিটেকচার অ্যান্ড আর্বানিজমের নির্বাহী পরিচালক আদনান জিল্লুর মোর্শেদ জানান, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ওপর একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
সাংবাদিক ও লেখক ফারুক ওয়াসিফ জানান, নতুন মধ্যবিত্তকে নেতৃত্ব দেওয়ার উপযোগী শ্রেণী নয়, বরং ভোক্তা গোষ্ঠী মনে হয়।
পিপিআরসির চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান আলোচনার সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন।
সূত্র : ডেইলি স্টার