সুপ্রভাত ডেস্ক »
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান অস্থিরতায় মংডু শহরও পুরোপুরি দখলে নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আরাকান আর্মি। এতে নাফ নদীর আরাকান জলসীমায় বাংলাদেশি জেলেসহ সব নৌযান চলাচলকারীদের না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জল-স্থলপথে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট ও বিজিবি সদস্যরা।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশি জেলেসহ সব নৌযান চলাচলকারীদের সেদিকে না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে টেকনাফ এলাকায় মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরকান আর্মির যুদ্ধ চলছে।
ইউএনও বলেন, আরাকান আর্মি টেকনাফ বর্ডার এলাকায় সেদেশের সীমান্ত পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। গতকাল থেকে তারা সেদেশের জলসীমানায় নাফনদীতে সব নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাই আমরাও টেকনাফের ফিশিং ট্রলার মালিকদের অবগত করেছি। নাফ নদী সীমান্ত এখন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেখানে কোনও ট্রলার না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।
টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারীরা বলছে, গত কয়েকদিন ধরে রাখাইনের মংডুতে সংঘর্ষের তীব্রতা ব্যাপকহারে বেড়েছে। গোলার শব্দে আতঙ্কের মধ্য রয়েছে টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারীরা। রাখাইনে অধিকাংশ জায়গা আরকান আর্মির দখলে ছিল। তবে মংডু শহরের কিছু অংশ জান্তা সরকারে নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেটির কারণে যুদ্ধ চলছিল দুইপক্ষের মধ্যে। ইতোমধ্য সেটিও আরকান আর্মি দখলে নিয়েছে।
নাফ নদীতে আরাকান আর্মির নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জেনেছি উল্লেখ করে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের চট্টগ্রাম মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোয়াইব বিকাশ বলেন, বাংলাদেশ জলসীমানায় যেকেউ হোক, আমরা কাউকে ঢুকতে দেবো না। জালিয়ার দ্বীপ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত আমাদের টহল জোরদার রয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের জলসীমানা অতিক্রম না করতে বলা হচ্ছে।
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ কাদের বলেন, মংডু শহরও এখন আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে শুনেছি। এছাড়া জেলেদের ওপার সীমান্তে না যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আমরাও বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি আরাকান আর্মি মংডু শহরও দখলে নিয়েছে। তবে এ নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত।
রাখাইনে রাজ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে উল্লেখ টেকনাফ-২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, সীমান্তে যেকোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও নিরাপত্তায় নাফ নদী ও স্থলে বিজিবির সদস্যরা সতর্ক রয়েছে। এছাড়া সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।