ভোগান্তি দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন

সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপর পর্যন্ত বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা চলেছে। সে সঙ্গে জলাবদ্ধতা নাগরিক জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। নগরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না বেশিরভাগ সময়ে। কিছু এলাকায় ঘণ্টা-দেড়ঘণ্টায় এলেও বিদ্যুতের স্থায়িত্ব ছিল ৩০ সেকেন্ড থেকে বড় জোর পাঁচ মিনিট পর্যন্ত।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিণের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম নিজেই বলেছেন সাংবাদিকদের, ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের বেশকিছু এলাকা সকাল থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে বিভিন্ন ভবনের নিচতলা এবং মিটার ইউনিট পানিতে ডুবে যাওয়ায় এসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে রাতে দুর্যোগের কারণে আমাদের লোড ৩৫০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল। এখন সেটি ৬০০ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ হয়েছে।
নগরের দুই নম্বর গেইট, চকবাজার, ওয়াসা, হালিশহর, অক্সিজেন, মাদারবাড়ি, বাকলিয়া, চন্দনপুরা, সররঘাট এলাকার মানুষও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ভোগান্তিতে পড়েছেন। এসব এলাকার এলাকাবাসীরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর বিদ্যুৎ আসে আর যায়। সোমবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুতের দেখা নেই। এতে বাসাবাড়িতে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে খাবার ও ব্যবহারের পানি তোলা যাচ্ছে না।
শুধু নগরেই নয়, সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, রাউজান, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, মীরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, লোহাগড়া, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী ও চন্দনাইশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক নেই। এসব উপজেলায়ও সকাল থেকেই বিদ্যুৎ নেই। কিছু কিছু উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও লোডশেডিং চরমে।
জানা গেছে, ঝড়ের কারণে চট্টগ্রামের ৮ উপজেলায় ৭১টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে, ৯৫টি খুঁটি হেলে পড়েছে, ৩৪৯ জায়গায় তার ছিঁড়ে গেছে, ২৫টি ট্রান্সফরমার ও ৩৩০টি মিটার নষ্ট হয়েছে।
এদিকে রোববার গভীর রাতে বৃষ্টি শুরু হয়। ভোররাতে তা রূপ নেয় ভারী বর্ষণে। এভাবে টানা বৃষ্টিতে সোমবার সকালেই নিচতলায় অবস্থিত অনেক ঘরে পানি ঢুকে যায়। রাস্তাঘাটও ডুবেছিল কোমরসমান পানিতে। এই পানি ডিঙিয়ে অনেকে কর্মস্থলে যেতে পারেননি । অনেকের ঘরে চুলাও জ্বলেনি, হয়নি রান্না। জলাবদ্ধতায় এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকার অন্য বাসিন্দাদেরও। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বর্ষণে সোমবার সকালেই নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে তলিয়ে যায় মূল সড়ক, অলিগলি ও মানুষের ঘরবাড়ি। সকাল সাতটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত অন্তত সাত ঘণ্টা জলাবদ্ধ ছিল চট্টগ্রাম নগর।
এসব ভোগান্তি দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক নানা জটিলতায় সাধারণ মানুষের জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। তাদের পরিত্রাণ দিতে সর্বমহলের দ্রুত এগিয়ে আসা উচিত।