অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই »
পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত ফলের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাহাড় থেকে বিপুল পরিমাণ মৌসুমী ফল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে পাহাড়ে উৎপাদিত এসব ফলসমূহ সুস্বাদু এবং ফরমালিনমুক্ত হওয়াতে চাহিদাও বেশি থাকে। তাইতো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পাহাড়ের এসব ফল সংগ্রহ করে নিয়ে যান। দামও তুলনামুলক অনান্য জায়গার তুলনায় অনেকটা কমে পাওয়া যায়।
পাহাড়ে উৎপাদিত ফলের মধ্যে কলার চাহিদা প্রথম দিকে। যার ফলে কাপ্তাই উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম জেটিঘাটে সাপ্তাহিক এক শনিবারেই প্রায় লক্ষাধিক টাকার কলা কেনাবেচা হয়ে থাকে। সম্প্রতি কাপ্তাইয়ের জেটিঘাটের সাপ্তাহিক হাটে গিয়ে দেখা যায় শত শত ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কলা নিয়ে আসছেন চাষীরা। যেগুলো ঘাটে ভিড়ার সাথে সাথেই বোটের সামনে জড়ো হচ্ছেন কলা বেপারিরা। শুরু হচ্ছে দরদামের প্রতিযোগিতা। দরদামে মিলে গেলেই এসব কলা ট্রাকে ভর্তি করে নেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা সদর, ধুপশীল, লতাপাহাড়, ফারুয়া, রাইক্ষ্যং, কেংড়াছড়ি, কাপ্তাইয়ের হরিনছড়া, বারুদগোলাসহ বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে চাষীরা সাপ্তাহিক বাজারে এই কলা নিয়ে আসেন বিক্রয়ের জন্য। তারা সবাই বোটযোগে কাপ্তাই হ্রদ ব্যবহার করে জেটিঘাটে এসে পৌঁছান।
বিলাইছড়ির দুর্গম রাইক্ষ্যং এলাকা থেকে কলা নিয়ে আসা কয়েকজন চাষী জানান, আমাদের নিজস্ব বাগানের উৎপাদিত এই কলা আমরা জেটিঘাট বাজারে প্রতি সাপ্তাহিক হাটে নিয়ে আসি। পূর্বে ভালো দাম পেলেও এবং যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধা থাকলেও বর্তমানে বোট ভাড়া বেড়ে গেছে। এখন কলা আনতে অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া খরচও বেশি হয়। এরকম বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আরো কয়েকজন কলাচাষী জানান, কাপ্তাই জেটিঘাটে কলা নিয়ে আসতে বর্তমানে খুব অসুবিধা হয় তবে কলা আনার সাথে সাথে এখানে সব কলা বিক্রি হয়ে যায়। তাছাড়া কলা বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাপ্তাই জেটিঘাটে কলা কিনতে আসেন ব্যাপারীরা। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, কাপ্তাইয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়াতে সাপ্তাহিক হাটের ভোরবেলা চলে আসেন কলা কিনতে। কলার পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফল সংগ্রহ করেন তারা। তবে এখানকার কলাগুলো খুব ভালো। দামও অনেকটা কমে পাওয়া যায়।
এদিকে কাপ্তাই জেটিঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি সাপ্তাহিক হাটেই প্রায় লক্ষাধিক টাকার কলা কেনাবেচা হয়ে থাকে। যা অনান্য মৌসুমী ফলের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।