সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
বঙ্গবন্ধু আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ওমেন্স ট্রফির অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার পল্টনের হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বাংলাদেশ তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর ভারতকে ৪৬-৪৩ গোলে পরাজিত করেছে।
প্রথমার্ধের খেলা ২০-২০ গোলে সমতা ছিল। বাংলাদেশ-ভারত ফাইনালটি নাটকীয় মোড় নিয়েছিল বেশ কয়েকবার। দুই দলের তীব্র লড়াইয়ে একবার ভারত এগিয়ে যায় তো, গোল করে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের ২০ মিনিট পর্যন্ত ১৬-১০ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক মোছাম্মৎ মারফি, রুনা লায়লারা। মুহুর্মূহ আক্রমণে ভারতের রক্ষণে কাঁপন ধরান ডালিয়া আক্তারের শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধের লড়াইটা ছিল আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। দুই দলের খেলোয়াড়রা যেমন তাদের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন, তেমনি পেশীশক্তিরও। মেজাজ হারিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হতে গিয়ে মাশুলও গুণতে হয়েছে দু’দলকে। খেলার ৪৪ মিনিটে লাল কার্ডের শাস্তিতে ম্যাট ছাড়েন ভারতের বালাসো মানে। তখন ৬ জনের দলে পরিণত হয় ভারত। বাংলাদেশের খেলোয়াড় ছিল ৭ জন। ওই সময়ও ম্যাচে পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সফরকারীরা ৩৩-২৮ গোলে। খেলার ৫০তম মিনিটে গিয়ে ভারতকে একেবারে চেপে ধরেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এ সময় গোলের পর গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনে স্বাগতিকরা। ৫৫তম মিনিটে গিয়ে টানা তিন হলুদ (২ মিনিট করে মাঠের বাইরে থাকার শাস্তির ফল) দেখে ম্যাট ছাড়েন বাংলাদেশের টপ স্কোরার অধিনায়ক মারফি। তখনো ম্যাচে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
একটা সময় মনে হয়েছিল লিগ পর্বের মতো ফাইনালেও ভারতের কাছে হারতে যাচ্ছে ডালিয়ার দল। কিন্তু মারফির অনুপস্থিতিও বুঝতে দেননি রুনা লায়লা, তানিয়া, দ্বীপা রানীরা। পুরো ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল বাংলার মেয়েদের। ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করেন অধিনায়ক মারফি। এছাড়া রুনা লায়লা ১৪, তানিয়া ১০, দ্বীপা রানী ৫, ফাতেমা প্রেমা ও সানিয়া আক্তার সমান ১টি করে গোল করেন। ভারতের পক্ষে রেনুকা সর্বোচ্চ ১৬ গোল করেন।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের কোচ ডালিয়া আক্তার বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আমি বলেছিলাম চমক দেখাবে আমার দল। সেটাই করে দেখিয়েছে তারা। মেয়েদের এমন পারফরম্যান্সে আমি অনেক খুশি। আমি আমার খেলোয়াড়ি জীবনে কখনো ভারতকে হারাতে পারিনি। কিন্তু প্রথমবার কোচ হয়ে সেই অর্জনে নাম লেখাতে পেরেছি। ভারতকে যে কোনো খেলায় হারানো কঠিন। হ্যান্ডবলে তো আরো কঠিন। সেই কঠিন কাজ আমার মেয়েরা করে দেখিয়েছি।’