সুপ্রভাত ডেস্ক »
২১ এপ্রিল বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেতে যাচ্ছে ভয়াল ‘এভিল ডেড’ সিরিজের নতুন ছবি ‘এভিল ডেড রাইজ’। লি ক্রনিন পরিচালিত এই অতিপ্রাকৃত ভৌতিক ছবি একই দিনে মুক্তি পাবে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায়। ঈদের পূর্বমুহূর্তে মুক্তি পেতে যাওয়া ছবিটি দর্শকদের ঈদ বিনোদনে বাড়তি আনন্দ যোগ করবে বলে মনে করেন স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। হরর সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় একটি নাম এভিল ডেড। এই ট্রিলজির প্রথম ছবিটি অনেক আগেই পেয়েছে ক্লাসিকের মর্যাদা। অতিরিক্ত ভায়োলেন্সের কারণে কিছু দেশে ছবিটি নিষিদ্ধ হলেও এখন পর্যন্ত এটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হরর ছবিগুলোর একটি।
পরিচালক স্যাম রেইমির এক অনবদ্য মাস্টারপিস। হরর এবং ব্ল্যাক কমেডি এ দুইয়ের অসাধারণ সংমিশ্রণ ঘটেছে এখানে। এভিল ডেড ট্রিলজির রয়েছে শক্তিশালী একটি ফ্যানবেজ, যা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কাল্ট ফিল্মগুলোর তালিকায় থাকবে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া অনেক সমালোচকও মনে করেন, হরর সিনেমার জগতে ‘এভিল ডেড’ উল্লেখযোগ্য একটি নাম। এই ট্রিলজির প্রথম সিনেমা ‘দ্য এভিল ডেড’ মুক্তি পায় ১৯৮১ সালে। সিনেমাটির কাহিনি মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির পাঁচ শিক্ষার্থী- অ্যাশ, তার বান্ধবী লিন্ডা, তার বোন সেরিল, তাদের বন্ধু স্কটি এবং স্কটির বান্ধবী শেলীকে নিয়ে। টেনেসির প্রত্যন্ত এলাকার জনমানবহীন এক কেবিনে ছুটি কাটানোর জন্য যায় তারা। অ্যাশ এবং স্কট সেখানে খুঁজে পায় এমন একটি বই, যা কিনা ‘বুক অব ডেড’ নামের একটি মিশরীয় বইয়ের সুমেরীয় সংস্করণ। এর সাথে তারা খুঁজে পায় একটি টেপ রেকর্ডার, যেখানে বলা আছে এই বইটি সম্পর্কে। বলা হয়ে থাকে, শয়তানের উপাসকরা এই বইটি লিখেছিল মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য। মানুষের রক্ত দিয়ে লেখা এই বইয়ের কিছু লাইন, যা মন্ত্রের মতো, ঠিকভাবে পড়লে শয়তানের জগতের সাথে যোগসূত্র স্থাপন হবে। তারা যখন টেপ রেকর্ডারটি চালু করলো, তখনই ঘটলো বিপত্তি।
ওখানে রেকর্ড করা ছিল কেবিনের মালিকের কণ্ঠে পাঠ করা বইয়ের কিছু অংশ। যে কারণে জঙ্গলের গভীর থেকে উঠে আসে শয়তানের দল। সিকুয়েল ‘এভিল ডেড টু: ডেড বাই ডন‘ মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। ‘দ্য এভিল ডেড’ যেখানে শেষ হয়, এই সিনেমা শুরু হয় সেখান থেকেই। এখানে চরিত্রগুলো আলাদা। পর্দায় আবির্ভাব হয় কেবিনের মালিকের মেয়ে, তার বন্ধু এবং আরও দুজন লোকের। আবারও শুরু হয় অশরীরী আত্মাদের সাথে অ্যাশের লড়াই। ট্রিলজির তৃতীয় ‘আর্মি অব ডার্কনেস’ মুক্তি পায় ১৯৯২ সালে। সিনেমার শুরুতে দেখা যায়, অ্যাশ মধ্যযুগের ইউরোপে চলে এসেছে। কীভাবে এলো তা বোঝার জন্য দেখতে হবে আগের পর্বটি। সেখানকার লোকজন বিশ্বাস করে আকাশ থেকে নেমে আসবে এমন একজন ব্যক্তি যে কিনা শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করবে তাদেরকে। শুরু হয় অ্যাশের নতুন লড়াই।
২০১৩ সালে ‘এভিল ডেড’ নামে মুক্তি পেয়েছে আরেকটি সিনেমা, অনেকটা রিমেক বলা যায় একে। কিন্তু ট্রিলজির মূল চরিত্র অ্যাশের বদলে এসেছে মিয়া অ্যালেন নামের আরেকটি চরিত্র।
এরপর ২০১৫ সালে এই ফ্রাঞ্চাইজি থেকে নির্মিত হয়েছে ‘অ্যাশ ভার্সেস এভিল ডেড’ নামের একটি টেলিভিশন সিরিজ। ক্লাসিক ওই ট্রিলজি থেকে কাহিনি নিয়ে বানানো হয়েছে এই টিভি সিরিজটি, যার মূল চরিত্রে আছে অ্যাশ। ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলে এই টিভি সিরিজটি।
২০১৯ সালে সিরিজের পঞ্চম ছবি ‘এভিল ডেড রাইজ’ নির্মাণের ঘোষণা দেন স্যাম রেইমি। তবে এবার পরিচালনার ভার পড়ে লি ক্রনিনের ওপর। এ ছবিতে দেখা যাবে, দীর্ঘ যাত্রার পর, বেথ তার বড় বোন এলির সাথে দেখা করে, যে লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে একা তিনটি সন্তানকে বড় করার জন্য সংগ্রাম করছে। তাদের পুনর্মিলন বাধাগ্রস্ত হয় যখন তারা এলির বিল্ডিংয়ের গভীরে লুকানো একটি অদ্ভুত বই খুঁজে পায়, যা ভয়ঙ্কর মাংসের অধিকারী দানবদের মুক্তি দেয়। এরপরই একে একে ঘটতে থাকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা।