নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘এই বিদ্যালয়ে জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। আমাদের সন্তানরা তার প্রতিবাদ করেছে। তখন আমাদের সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখভাল করে। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষককে বদলির আদেশ দিই। পরে তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা সাময়িক বহিষ্কার করে দিই। যে শিক্ষক নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে, তার শিক্ষকতা করার কোনো যোগ্যতা নেই।’
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে এসব কথা বলেন মেয়র রেজাউল করিম।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কারণ আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠায় শিক্ষা লাভের জন্য। মা বাবার পরে শিক্ষকের অবস্থান। কিছু ব্যক্তির জন্য আমাদের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সুনাম নষ্ট হোক, তা হতে পারে না। মানুষের ঘরে জন্ম নিলে মানুষ হওয়া যায় না, মনুষ্যত্ব, মানবিক গুণাবলি, নীতি নৈতিকতা অর্জন করতে হয়। আমার সবচাইতে লজ্জা লাগে, যখন একজন শিক্ষকের নীতি নৈতিকতা হারিয়ে যায়। পশুত্ব যখন তার মধ্যে বিরাজ করে। শিক্ষক শিক্ষা দেবে আামাদের সন্তানকে। কিন্তু এমন অপ্রীতিকর ঘটনা আশা করা যায় না।
তিনি বলেন, ‘লোক মুখে অভিযোগ পেলেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীরা বিক্ষোভ করেছে। আগে কোনো অভিভাবক এবং শিক্ষক আমার কাছে অভিযোগ করেনি। একবার যদি জানতে পারতাম, সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হতো। অভিভাবকের কথা বাদ দিলাম, শিক্ষকরা কেন অভিযোগ করেনি। শিক্ষকরাও দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন।
স্কুলের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের মেয়েরা স্কুলে নিরাপদ না হয়; তাহলে আমরা কেন পাঠাবো আমাদের সন্তানদের। ভবিষ্যতে ফের এমন ঘটনা ঘটলে কোনো শিক্ষক এবং কর্মকর্তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। শুধু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্কুল নয়, কোনো স্কুলেই জায়গা হবে না। বিদ্যালয়ে মহিলা প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষককে সবাই সহযোগিতা করবেন। স্কুলে আসবেন, আমাদের সন্তানদের শিক্ষা দেবেন। কোনো দলাদলি দেখতে চাই না। এর ফলে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়। শিক্ষার্থীর মাঝে সংক্রমিত হয়। যদি অভিযোগ পাই, আমি বদলি করবো না, সরাসরি চাকরিচ্যুত করবো।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘এক সময় ব্যাপকভাবে ভর্তি বাণিজ্য হতো। গত বছর থেকে আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে ভর্তি করানোর পদ্ধতি রাখিনি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক সরাসরি ভর্তি করাতে পারে না। যদি কেউ ভর্তি হতে চায়, সিট যদি খালি থাকে, চসিকে অভিভাবকের আবেদনে তা দেখা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরবর্তী কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি যে রিপোর্ট দেবে, সেই রির্পোট অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাকরিবিধি অনুযায়ী, নীতিমালা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ সময় চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, ওয়ার্ড কাউন্সিল নুর মোস্তফা টিনু, বিদ্যালয়ের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোমা বড়–য়াসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।