সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রকল্প বাস্তবায়নে সবরকম ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দ্রুত কাজ করেন। খরচ কম করেন। তবে খরচ একেবারে বন্ধ করা যাবে না। একান্ত প্রয়োজনীয় ব্যয় করতেই হবে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এমন নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। খবর সারাবাংলার।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে ব্রিফিং এ এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ দ্রুত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কাজের মান বাড়ানো ও খরচ কমানোর তাগিদ দিয়েছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উৎপাদন বাড়াতে হবে। যে যেভাবে আছেন, তাদের কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে একনেক বৈঠকে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি খুব খারাপ নয়। এক্ষেত্রে রিজার্ভ সর্বশেষ গত ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩২ বিলিয়ন ডলার ছিল। সেটি স্থিতিশীল আছে। এ ছাড়া রফতানি চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এসেছে ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২৪ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। বেড়েছে ২ বিলিয়ন ডলার।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ ছাড়া রেমিটেন্স এসেছে এ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত অর্থবছর একই সময়ে এসেছিল ১০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। মূল্যস্ফীতি কমেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- বিশ্ব মন্দার ঢেউ বাংলাদেশে লাগবে না। আমাদের কৃষি ও শিল্পের প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক কোনো প্রভাব পড়বে না।’
একনেকের সভায় কিশোরগঞ্জে উড়াল সড়কসহ ১১ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৮২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৮৮০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে পটিয়া উপজেলার শ্রীমাই নদীতে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বরিশাল জেলার কারখানা বিঘাই এবং পায়রা নদীর ভাঙন থেকে শেখ হাসিনা সেনানিবাস এলাকা রক্ষা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৬ কোটি টাকা। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলাধীন মাঝিরচর থেকে নারিশাবাজার হয়ে মোকসেদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী ড্রেজিং ও বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫২৮ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উপকুলীয় ছোট দ্বীপ এবং নদীর চরের জন্য অভিযোজন উদ্যোগ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। মাতারবাড়ী কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা সদর থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার মচিখালি পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬৫১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এস্টাবিলিশমেন্ট অব গ্লোবার মেরিটাইম ডিজট্রিজ অ্যান্ড সেফলি সিস্টেম অ্যান্ড ইন্টারগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশে ২৫টি শহরে অন্তর্ভূক্তিমূলক স্যানিটেশন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডপটেড আরবান ডেভলপমেন্ট পেজ-২ খুলনা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ঘোড়াশাল চতুর্থ ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।