সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকায় গত বছরের ৩ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে শহিদুল ইসলাম শহিদ নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ২৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই আন্দোলনে প্রাইভেটকারে করে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করা যুবলীগ ক্যাডার জাফরের নাম।
গুলিবর্ষণের ঘটনায় পত্রিকার উঠে আসে তার নাম। অথচ সেই জাফরের নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
বুধবার (৩০ জুলাই) এই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. ফয়সাল।
এটি গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আওতাধীন থানাগুলোতে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে প্রথম অভিযোগপত্র।
গত বছরের জুলাই আন্দোলনের একাধিক ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবর্ষণের ঘটনায় নেতৃত্ব দেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। বাবরের নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে তার অনুসারী যুবলীগ ক্যাডার জাফরকে। সংঘর্ষে যেসব অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে, সেগুলো একটি প্রাইভেটকারে করে সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্ট মেট্রো-গ-১৪-৩২২১ নিবন্ধন নম্বরের প্রাইভেটকারটির মালিক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের ঘনিষ্ঠ জাফর। প্রাইভেটকারটি থেকে একটি ব্যাগ নামানো হয়। ওই ব্যাগে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। ২৩১ জনের নাম আছে অভিযোগপত্রে। একটি মামলায় তো সবাইকে দেওয়া যাবে না। আমাদের থানায় আরও ১২টি মামলা রয়েছে, সেখানে জড়িতদের নাম উঠে আসবে।
পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ছোড়া ১০টি গুলি লেগেছে শহীদুলের শরীরে। শটগান ও বন্দুক থেকে এসব গুলি ছোড়া হয়। তবে কার কার ছোড়া গুলিতে শহীদুলের মৃত্যু হয়েছে, সেটি অভিযোগপত্রে সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
অভিযোগপত্রে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ। বাকি আসামিরা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
গত বছরের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শহিদুল ইসলাম শহিদ। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ওই বছরের ১৯ আগস্ট ভুক্তভোগীর ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।