# করোনাকালে সমাগম কমাতে কলেজে প্রবেশপত্র সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে
# একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও প্রবেশপত্র পরবর্তীতে একসাথে দেয়া হবে : পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষাবোর্ডের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এবছর এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ করছে সরকারি সিটি কলেজ। প্রবেশপত্রগুলোর প্রিন্ট সংরক্ষণ করার কথা বলা হলেও বিতরণের কথা বলেনি শিক্ষাবোর্ড। আর এতে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের জটলা দেখা যায় কলেজ ক্যাম্পাসে।
গতকাল সোমবার সরকারি সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের জটলা। এবছর এইচএসসি পাশ করা শতাধিক শিক্ষার্থীকে দেখা যায় কলেজ ক্যাম্পাসে। এছাড়া অনেকে আবার প্রবেশপত্র সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন বুথে গিয়ে লাইন ধরছে। রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি জমা দিলেই দেয়া হচ্ছে প্রবেশপত্র।
কলেজের ওয়েবসাইট ও নোটিশ বোর্ডে প্রবেশপত্র বিতরণের নোটিশ দেয়া হয়েছে। ২৬ নভেম্বরে কলেজ অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর থেকে প্রবেশপত্র বিতরণ কার্যক্রম চলছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত প্রবেশপত্র বিতরণ করার কথা বলা হয়েছে। প্রতিদিন বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২০০ করে তিন গ্রুপের ৬০০ শিক্ষার্থীকে এই সময়ের মধ্যে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
কিন্তু চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ স্বাক্ষরিত ২০ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কলেজগুলোকে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে ২৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রবেশপত্র প্রিন্ট করতে। প্রবেশপত্রগুলো প্রিন্ট করে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেন্দ্রের আওতাধীন কলেজকে বিতরণ করবে। কলেজসমূহ তাদের পূরণকৃত পরীক্ষার্থীদের তালিকার সাথে প্রবেশপত্রের সঠিকতা যাচাইপূর্বক কলেজে সংরক্ষণ করবেন। ফরমপূরণকৃত তালিকার সাথে প্রবেশপত্রের অসঙ্গতি থাকলে কলেজ অধ্যক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করতে হবে।
কিন্তু সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রবেশপত্র বিতরণ করা বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, ‘অফিস আদেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে কলেজে সংরক্ষণ করতে। আর পূরণকৃত তথ্যের সাথে প্রবেশপত্রের কোনো অসঙ্গতি রয়েছে কিনা তা মিলিয়ে দেখার জন্য। যদি অসঙ্গতি পাওয়া যায় তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর জানানোর জন্য। কোথাও বলা হয়নি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে।
তিনি আরো বলেন, যদি কোনো কলেজ অফিস আদেশের অর্থ না বুঝে তাহলে আমাকে ফোন করতে পারে। এখন সিটি কলেজ কিভাবে তা বিতরণ করলো তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
সিটি কলেজ কিভাবে প্রবেশপত্র বিতরণ করছে তা জানতে সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মনজুর আহমেদের মোবাইল নম্বরে ফোন ও সুপ্রভাতের পরিচয় দিয়ে মেসেজ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সুদীপা দত্তকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘হুম, আমরা প্রবেশপত্র বিতরণ করছি। বিতরণ করার জন্য শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা ছিল এছাড়া অন্যান্য কলেজও বিতরণ করেছে।’
কিন্তু বিতরণের বিষয়ে বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘তাহলে আমাকে জেনে বলতে হবে। আর এই বিষয়টি অধ্যক্ষ আদেশ করেছেন।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজিবুল হক চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রবেশপত্র বিতরণের বিষয়ে বোর্ডের কোনো নির্দেশনা না থাকায় আমরা বিতরণ করিনি। তবে আমাদের কেন্দ্রের আওতাধীন কলেজগুলোকে তা দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
কিন্তু শিক্ষার্থীদের বণ্টনে শিক্ষাবোর্ড আদেশ দেয়নি কেন জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, শিগগিরই শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট দেয়া হবে। প্রবেশপত্র ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট একসাথে বিতরণ করা হবে। করোনাকালে শিক্ষার্থীরা যাতে বার বার কলেজে আসতে না হয় সেজন্য আমরা প্রবেশপত্র বিতরণ করতে বলিনি।
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের ফরম পূরণের কিছু টাকাও ফেরত পাবে। এখন কত টাকা ফেরত পাবে তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। সেসব টাকাও যাতে শিক্ষার্থীরা একসাথে পেতে পারে আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র স্ব স্ব কেন্দ্রসচিবগণ নির্ধারিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে প্রিন্ট করে থাকেন। ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সকলকে সরকার উত্তীর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে তাদের গ্রেডিং এখনো ঘোষণা করা হয়নি।