বেড়িবাঁধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক

নদ-নদী, খাল-নালা পাহাড়-টিলা দখলকারীদের জিহ্বা এতই লম্বা হয়ে গেছে যে তাদের লালসা থেকে রেহাই পাচ্ছে না বেড়িবাঁধ পর্যন্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা গেছে, আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের শাহাদত নগর থেকে বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে গহিরা বার আউলিয়া পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও আশেপাশের এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ একর জমি অবৈধ দখলে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব জমিতে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন স্থাপনা, বসতঘর ও দোকানপাট নির্মাণ করে রাখার কারণে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে, রায়পুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের দুপাশের ৫০–থেকে ৬০ একর
জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘ দিন ধরে দখলে নিয়ে পাকা ঘর, সেমি পাকাঘর, পর্যটন কটেজ, টিন সেট ঘর, দোকানপাটসহ বাণিজ্যিকভাবে নানান স্থাপনা তৈরি করে দখলে রাখে। এসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে বার বার তাগাদা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। উল্টো দখলদারের সংখ্যা কমার চেয়ে গত ১ বছরে বেড়ে আরও বেড়েছে। সংঘবদ্ধ চক্রটি হোটেল, কটেজ, দোকান নির্মাণের নামে নির্বিচারে দখলযজ্ঞে মেতেছে। পত্রিকার খবরে জানা গেছে, কোথাও মসজিদ বানিয়ে সরকারি জায়গা হাতিয়ে নেয়ার কারবারও চলছে। অবৈধ দখলে থাকা এসব জমির মূল্য আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সর্বশেষে যা জানা গেল, আনোয়ারার উপকূল রক্ষা করা বাঁধ দখল করে নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করার আগে গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা প্রশাসন ও পাউবো যৌথ উদ্যোগে মাইকিং করে সতর্ক করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি পেলে আগামী আগস্ট মাসে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে বেড়িবাঁধ একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাবকচ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এসব বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রচুর দুর্নীতি হয়ে থাকে। যে কারণে সামান্যতেই ধসে পড়ে বাঁধগুলো। তার ওপর যদি দখল হয়ে সেখানে বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা হয় তাহলে তো ক্ষতির মাত্রা আরও কয়েক শ গুণ বৃদ্ধি পাবে।
বাঁধ দখলমুক্ত করাই শেষ কাজ নয়, ভবিষ্যতে যেন জনগণের সম্পত্তির ওপর চোখ ফেলতে না পারে তার ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানাচ্ছি।