সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »
প্রেম, বন্ধুত্ব, আড্ডার সড়ক হিসেবে খ্যাতি বেইলি রোডের। হরেক রকম খাবারের সমাহার সেখানে। তাই নাগরিক ব্যস্ততার ফাঁকে মানুষ সেখানে ছুটে যায়, খেতে, গল্প-আড্ডায় মশগুল হতে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এমনই সন্ধ্যা নেমেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা রূপ নিয়েছে ভয়াল রাতে, আগুনের ধ্বংসযজ্ঞে।
রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। যে ঘটনায় অন্তত ৪৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পরে ধারণা চিকিৎসকদের।
হৃদয়বিদারক এই দুর্ঘটনায় ব্যথিত দেশবাসী। তারকাদের মনেও নেমেছে বিষাদের ছায়া। অনেকেই শোকবার্তা দিয়েছেন বেইলি রোড ট্র্যাজেডি নিয়ে। দাবি জানিয়েছেন সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের।
ঢালিউড তারকা শাকিব খান বলেছেন, ‘গতরাতে (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেইলি রোডে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আগে সেখানে বেশিরভাগ মানুষ হয়তো গিয়েছিলেন তাদের প্রিয়জন নিয়ে আনন্দময় কিছু সময় ভাগাভাগি করতে। কেউ কেউ গিয়েছিলেন শপিং বা পরিবার পরিজন নিয়ে ফ্রি টাইমে খাওয়া-দাওয়া করতে। কিন্তু এক নিমিষেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থামিয়ে দিয়েছে এতগুলো জলজ্যান্ত জীবন। স্বজন হারিয়ে অনেকের ভবিষ্যৎ জীবনে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা! অনেকের তিলে তিলে গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে। কিছু দিন পর পর অগ্নিকাণ্ডে এত এত তরতাজা প্রাণ অকালে চলে যাওয়া এবং ক্ষয়ক্ষতি কোনোভাবে কাম্য নয়। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা সবসময় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন, সেসব ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের জানাই স্যালুট! বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করছি। হাসপাতালে যারা সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন, তারা যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন সেই কামনা করছি। মহান সৃষ্টিকর্তা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সকলকে এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার শক্তি দান করুন।’
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী যেন বাকরুদ্ধ। তেমন কিছুই বলতে পারলেন না। কেবল ভবনটির পূর্বের ও বর্তমান অবস্থার চিত্র শেয়ার করে বলেছেন, ‘হায়রে বেইলি রোড!’
অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব বলেছেন, ‘বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে আহত-নিহতদের প্রতি সমবেদনা। মহান আল্লাহ সবার পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দিন।’
অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী শেয়ার করেছেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো মানুষের তালিকা। সেই সঙ্গে তাদের জন্য বেহেশত প্রার্থনা করে দিয়েছেন পোস্ট।
ছোট পর্দার তারকা অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব সোশ্যাল হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘ঝলমলে বেইলি রোড এখন পোড়া বাড়ি! ভিডিও দেখে যতটুকু বুঝলাম, আগুনের সূত্রপাত নিচতলা থেকে, কাচ্চি ভাই থেকে নয়।’
অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা বললেন, ‘এই ৪৬ জন কারও মেয়ে, কারও বাবা, কারও মা, কারও ছেলে, কারও ভাই, কারও বোন, কারও ভালোবাসার মানুষ, কারও প্রাণের বন্ধু, কারও একমাত্র মনের মানুষ, কারও একমাত্র আশ্রয়ের জায়গা, আজ ঢাকার বাতাসে পোড়া গন্ধ। আহারে! জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে ফারাক কতটুকু?’
চিত্রনায়িকা জাহারা মিতু শোক প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘নিমতলী থেকে বেইলি রোড, বঙ্গবাজার থেকে নিউমার্কেট; একের পর এক ঘটে যাবে এমন ঘটনা। ক্ষণিক সময়ের আহাজারি শেষে আমরা মেতে উঠবো বিপিএল-এর ফাইনাল কিংবা বাদশাহর কনসার্টের মতন কোনও ইভেন্টের আনন্দে। অথচ ভুলে যাবো কাল (২৯ ফেব্রুয়ারি), হয়তো আমরাও হতে পারি কোনও লেলিহান শিখার গ্রাস। সময় এসেছে অগ্নি-দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতি রাখার। ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজন উন্নয়ন। প্রত্যেকটি দালানের মালিকদেরও প্রয়োজন সচেতন হওয়া। এসব শুধু বলেই যাবো কিংবা লিখে। তবে কাজের কাজ আসলে হবে না কিছুই।’