চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার, টাঙ্কির পাহাড়, মতিঝর্ণা, বাটালি হিল ও পোড়া কলোনির পাহাড়, ষোলশহর স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়, বিজয় নগর, আকবর শাহ থানার ফয়’স লেক সংলগ্ন ১ নম্বর ঝিল, ২ নম্বর ঝিল, ৩ নম্বর ঝিল এলাকা ও শান্তিনগর এলাকা, ফিরোজ শাহ কলোনি, বেলতলি ঘোনা, চান্দগাঁও থানার আমিন জুট মিলস পাহাড়, ভেড়া ফকিরের পাহাড়, বার্মা কলোনি, বায়েজিদ লিংক রোড এবং সলিমপুরের পাহাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে।
২০২৩ সালে করা জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুসারে, নগরের সরকারি-বেসরকারি ২৬টি পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৫৫৮টি।
এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মালিকানাধীন ১৬টি পাহাড়ে বসবাস ছিল ৬ হাজার ১৭৫টি পরিবার। আর ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০টি পাহাড়ে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ছিল ৩৮৩টি।
২০০৭ সালের ১১ জুন প্রবল ভারি বর্ষণে নগর ও আশেপাশের এলাকায় পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। এরপর গত ১৯ বছরে বিভিন্ন সময় পাহাড় ধসে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে নগরে।
এবারও নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের পর পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপনকারীদের সরাতে মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে নগরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতভর ভারি বৃষ্টির পর শুক্রবার দিনভর বৃষ্টি পড়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের হিসাবে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে ২২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
এদিকে অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পাবর্ত্য জেলা রাঙামাটি, খাগঢ়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার পাহাড়ি এলাকায় ভূমি ধসের সর্তকতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।
সেইসঙ্গে ভারি বর্ষণের কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
যতই বলা হোক, যতই সতর্ক করা হোক পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ সফল হয় না। কিছু দখলবাজ নিজেদের স্বার্থে এসব জায়গা দখল করে আর কিছু মানুষ কম ভাড়ায় থাকা যায় বলে এমন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করে। দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাণ যায় গরিবের, দখলদারেরা কোনো দায় নেয় না তখন।
প্রতিবার টানা বৃষ্টি হলে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিয়ে দখলমুক্ত করার কথা উচ্চারিত হয়। বাস্তবে তেমন কিছু ঘটে না।