সুপ্রভাত ডেস্ক »
নতুন বছরের শুরু থেকেই সাময়িকভাবে বন্ধ হচ্ছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির কার্যক্রম। গত ২৫ বছর ধরে চলা এই কার্যক্রমের প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এবং নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর মধ্যবর্তী সময় বিবেচনায় কিছু দিন এই সেবা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন। এদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হওয়া ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি চালু রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেন পাঠকরা।
এক বিবৃতিতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র জানায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ২৫ বছর ধরে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশবাসীর বুদ্ধিভিত্তিক ও সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনের চেষ্টা করছে। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির গাড়ির সংখ্যা ৭৬টি। এই গাড়িগুলো দেশের ৩ হাজার ২০০ এলাকায় বই দেওয়া-নেওয়া করে, অর্থাৎ সমান সংখ্যক ছোট লাইব্রেরির কাজ করে। এই লাইব্রেরির পাঠক সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ (নিয়মিত ও অনিয়মিত)। এই বিপুল সংখ্যক গাড়ি পরিচালনার ব্যয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তাই গাড়ি, বই, ইত্যাদি নিজস্ব হওয়া সত্ত্বেও জনবল ও রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করে কার্যক্রমটি চালাতে হয়।
শামীম আল মামুন জানান, গত ছয় বছর ধরে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কার্যক্রমটিকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে চলেছে। মন্ত্রণালয় এই সহযোগিতা দেয় প্রতি পর্বে দুই বছরের জন্য। প্রথম পর্ব শেষ হলে মন্ত্রণালয় আরও দুই বছর করে দুই বার এই সহযোগিতা দেয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের তৃতীয় পর্ব শেষ হচ্ছে। কার্যক্রমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হয় প্রকল্প মেয়াদের ভিত্তিতে। তাই এর আগের প্রতি পর্বের মতোই ওই ৩১ ডিসেম্বর তারিখে তাদের চাকরির মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী এবারও তাদের সব প্রাপ্য (চার মাসের অতিরিক্ত বেতনসহ) অর্থ পরিপূর্ণভাবে পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পরিচালক জানান, বিগত সরকারের শেষ দিনগুলোতে আমরা জানতে পারি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এই প্রকল্পে আর অর্থায়ন করা হবে না। কিন্তু বর্তমান সরকারের সময় নতুন করে আভাস মেলে, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আরও দুই বছরের জন্য প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করতে আগ্রহী। এসব দোটানার মধ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষে নতুন প্রকল্পের প্রক্রিয়াকরণে সঙ্গত কারণেই কিছুটা সময় লেগেছে। তাই আগামী ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের তৃতীয় পর্ব শেষ হলেও যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রকল্পের নতুন পর্বের অনুমোদন পেতে কিছুটা সময় লাগবে। একই কারণে ৩১ ডিসেম্বরের পর এই কার্যক্রমটি কিছু সময়ের জন্য স্থগিত থাকবে।