বিপন্নের মুখে বন্যহাতি, সুরক্ষার পদক্ষেপ নিতে হবে

সুপ্রভাতের প্রতিবেদকের পাঠানো সংবাদে জানা গেছে, বনভূমি ধ্বংস, প্রাকৃতিক করিডোর হারানো আর খাবারের অভাব- এই তিন কারণে কক্সবাজারের বন্যহাতি বিপন্নের পথে। রোহিঙ্গা শিবির স্থাপন এবং নতুন কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে বাধা সৃষ্টি হয়েছে হাতি চলাচলের পথ। এরফলে গ্রামে ঢুকে পড়ছে হাতি। ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসল, ভাঙছে ঘরবাড়ি, প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। মারা যাচ্ছে হাতিও। কক্সবাজার বনবিভাগ জানায়, গত ১০ বছরে কক্সবাজারে বন্যহাতির আক্রমণে মারা গেছেন ৬২ জন। বিদ্যুৎস্পৃষ্টসহ নানা কারণে প্রাণ হারিয়েছে ৩৩টি হাতি।
কক্সবাজারে মাত্র দুই শতাধিক হাতি আছে, যেখানে এক দশক আগে ছিল ৩০০-এর বেশি। বনভূমিতে খাবারের ব্যবস্থা ও হাতি-মানুষের সংঘর্ষ কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও হাতির নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা জরুরি।
এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “রোহিঙ্গা শিবির ও দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কারণে বহু করিডোর বন্ধ হয়ে গেছে। বন ধ্বংস ও খাবারের অভাবে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে, এতে প্রাণহানি ও কৃষির ক্ষতি বাড়ছে। নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত না হলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে কক্সবাজার থেকে বন্যহাতি একেবারেই হারিয়ে যেতে পারে।”

খাবারের অভাবে হাতি ভারত ও মিয়ানমারে চলে যাচ্ছে। অথচ দ্রুত পরিবেশ রক্ষায় তাদের এখানেই রাখা দরকার- এজন্য নিরাপদ আশ্রয় বর নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছি আমরা।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা- করিডোর পুনরুদ্ধার ও নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত না হলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে কক্সবাজার থেকে বন্যহাতি একেবারেই হারিয়ে যেতে পারে। কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ এর সাথে সংশ্লিষ্টরা বলেন, “আগে এখানে হাতির জন্য ১২টি করিডোর ছিল, বর্তমানে অর্ধেকের বেশি বন্ধ হয়ে গেছে। করিডোর পুনরুদ্ধার ও বন দখল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।”
এ বিষয়ে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আমরা বলতে চাই, এশিয়ান হাতি হিসেবে বাংলাদেশের হাতি আমাদের পরিবেশের সহায়ক। একে টিকিয়ে রাখা দরকার। আমরা নিজেরাই হাতির প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছি বনে-বাদাড়ে হাতির খাবারের উৎস ধ্বংস করে। ফলে এখন হাতিরা আমাদের শস্যক্ষেত ধ্বংস করছে। হাতির রোষ থেকে বাঁচতে হলে হাতিদের বাঁচার পথ করে দিতে হবে আমাদেরকেই।