সরকারি হাসপাতাল
নিজস্ব প্রতিবেদক <<
করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে পুরো বিশ্ব দিশেহারা। জীবন বাঁচানোর তাগিদে অক্সিজেন সিলিন্ডার যেন সোনার হরিণ। প্রতিবেশী দেশ ভারতও করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খেয়ে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের এই অবস্থায় আশার আলো দেখালো বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে প্রয়োজনীয় লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ করছে এই প্রতিষ্ঠান।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় দেশের মানুষের প্রয়োজনে বিনামূল্যে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে মেডিক্যাল অক্সিজেন সহায়তা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে শীর্ষস্থানীয় এই প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন একেএস প্ল্যান্টে ২৬০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের বৃহত্তম এই অক্সিজেন প্ল্যান্ট থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিগত ও হাসপাতালে বিনামূল্যে সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ২০টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা মোকাবেলায় প্রয়োজনে অন্যান্য প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিয়ে শুধু অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু রেখে অক্সিজেন সরবরাহ করবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর সীতাকুণ্ড থানাধীন শীতলপুরে ৬ একর জায়গাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে অক্সিজেন প্ল্যান্ট। গত বছরের ১২ মে থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করে।
তথ্যনুযায়ী, গেল ২০২০ সালের ১২ মে থেকে অক্সিজেন দেওয়া শুরু করে এই প্রতিষ্ঠান। টানা ১ বছরে ৭.৫ কিউবিক মিটার বা ৫০০ থেকে ৬০০ টন তরল অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে।
আবুল খায়ের গ্রুপের প্রশাসনিক বিভাগের সিনিয়ার ম্যানেজার ও ইনচার্জ মো. ইমরুল কাদের ভুইয়া সুপ্রভাতকে বলেন, গত বছর করোনা আঘাত হানার পর থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছে। প্রত্যেক করোনা হাসপাতালে আমাদের অর্থায়নে সিলিন্ডার ক্রয় করে সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। অন্যদিকে পাশের দেশ ভারত অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশ অক্সিজেন সংকটে পড়তে পারে। এই বিবেচনায় আমরা তরল অক্সিজেন বিভিন্ন সরবরাহকারীকে ও বিভিন্ন করোনা হাসপাতালে সরবরাহ করার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের দৈনিক চাহিদা ১০০ থেকে ১৫০ টন। কিন্তু আমাদের দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ২৬০ টন। আশা করি দেশে অক্সিজেনের কোন সমস্যা হবে না।
অন্যদিকে আবুল খায়ের গ্রুপের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সামসুজ্জোহা সুপ্রভাতকে বলেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের শুরুতেই আবুল খায়ের গ্রুপ বিনামূল্যে অক্সিজেন সররবাহ করে যাচ্ছে। আমাদের ২৬০ টন ডিপিডি প্ল্যান্ট রয়েছে। তার মধ্য প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদন হয় ২৫০ টন এবং লিকুইড হয় ১০ টন। আমরা মান ঠিক রেখে লিকুইড উৎপাদনকে বাড়িয়ে ১৫ থেকে ২০ টন বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করব।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১২ মে থেকে করোনা মোকাবেলায় অতি জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজনে একেএস প্ল্যান্টে উৎপাদিত অক্সিজেন জনস্বার্থে উন্মুক্ত করে দেয় আবুল খায়ের গ্রুপ। করোনার দেশের এ সংকটে মানুষের প্রয়োজনে নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ গ্রুপের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।