সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের শিল্পখাতে আরও বিনিয়োগ আনতে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বেপজা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করতে এলে তিনি এ নির্দেশ দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য বেপজার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য একটি টিম গঠন করুন এবং বিদেশে বাংলাদেশকে তুলে ধরুন।
বিদেশে বিশেষ করে চীন ও জাপানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার জন্য বেপজার কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। যাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার আগে বিনিয়োগকারীরা ভাষাগত বাধা অতিক্রম করতে পারেন।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান এবং পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গত তিন সপ্তাহে আমরা চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে, যেখানে ৪৫২টি কারখানা রয়েছে। এসব অঞ্চলে বর্তমানে নির্মাণাধীন আরও ১৩৬টি কারখানা আছে। অপারেশনাল কারখানাগুলোর মধ্যে ১০০টিরও বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন, বাকিগুলো যৌথ উদ্যোগে। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ কারখানা তৈরি পোশাক, টেক্সটাইলসামগ্রী ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদন করে। অন্য কারখানাগুলো বহুবিধ, কফিন এবং খেলনার মতো বিবিধ পণ্য উৎপাদন করে।
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড গুদাম সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি বিমান যোগাযোগ এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সিলর সেবাসহ বিনিয়োগকারীদের কিছু দাবির কথা প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন মেজর জেনারেল জিয়া।
ড. ইউনূস রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং গ্যাস অনুসন্ধান ও একটি বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সরকার একটি সমন্বিত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবে— যাতে শিল্পগুলো বিদ্যমান কেন্দ্র থেকে আরও বেশি বিদ্যুৎ পেতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা উচিত। আমাদের উচিত বেপজা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) আরও আকর্ষণীয় করা এবং আরও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশ্বব্যাপী এই অঞ্চলের সুবিধাগুলোর কথা প্রচার করা।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়াও উপস্থিত ছিলেন।