সুপ্রভাত ডেস্ক »
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ প্রমাণ করে দেশে একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবং তাদের আগমন ভালো নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক।
মন্ত্রী গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আরো বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময় অনেক ধরনের শঙ্কা-আশঙ্কার কথা অনেকে ব্যক্ত করেছিলো, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসবে কি না, সে নিয়েও নানাজনের নানামত ছিলো। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, অনেক দেশ থেকে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার আগ্রহ জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশি-বিদেশি সংস্থার পাশাপাশি ভারত, জাপান, ফিলিস্তিন, ওআইসি এবং আরব লীগ পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। অর্থাৎ সবসময় যেভাবে পর্যবেক্ষকরা আসে ঠিক একইভাবেই পর্যবেক্ষকরা আসবে। এতেই প্রমাণিত হয় আজকে যে দেশে নির্বাচনী ঢেউ বয়ে যাচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, মানুষ এবং দেশ পুরোপুরিভাবে নির্বাচনমুখী হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, সে কারণে যারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না, সে নিয়ে দোলাচলের মধ্যে ছিলো, তারাও এখন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি যে, এই নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের আগমন একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, ভালো নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং এখনও যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্থ করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে অবরোধ ডাকছে তারাও বুঝতে পেরেছে যে, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি ভালো নির্বাচন হতে যাচ্ছে।’
নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও শক্তিশালীভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যেই দেখেছেন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত বলিষ্ঠ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যেমন, বিভিন্ন থানার ওসিদের বদলি, ইউএনওদের বদলি এমন কি ডিসি বদলি। পূর্বের নির্বাচন কমিশনগুলোর সময় এতো ব্যাপকহারে বদলি ঘটেনি। এমন কি ডিসি বদলির ঘটনাও কদাচিৎ দু’একবার ঘটেছে। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন যে, পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে সেটিই প্রমাণ হচ্ছে এ ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রধানমন্ত্রী বারংবার এটি পুণর্ব্যক্ত করেছেন যে, নির্বাচন কমিশনকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোতভাবে সহায়তা করা হবে, যাতে করে একটি স্বচ্ছ, সুন্দর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।’
নির্বাচনে গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একটি উৎসবমুখর পরিবেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য সংবাদপত্রে, টেলিভিশনে ও অনলাইন গণমাধ্যমে নির্বাচনী খবরাখবর প্রচার এবং নির্বাচনী উৎসব যে গ্রামেগঞ্জে শুরু হয়ে গেছে সেটি প্রচার করলে এই উৎসবের মাত্রা আরো বাড়বে, নির্বাচনে মানুষের অংশগ্রহণও বাড়বে।’
এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ দ্রব্যের মূল্য কমেছে। গরুর মাংস আমার এলাকায় সাড়ে ৫শ’ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে মাইকিং করে, যেটি ক’দিন আগেও সাড়ে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা ছিলো। শাকসবজিসহ অন্যান্য পণ্যের দামও কমেছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে বাজারে বেড়ে যাওয়ার কারণ আমাদের কিছু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীর অসৎ মানসিকতার বহি:প্রকাশ ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়। ভোক্তা অধিকার সংস্থা এ নিয়ে অভিযান শুরু করেছে, ১৩৩ জন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে। এতে করে বাজারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে কিন্তু পুরোপুরি আসেনি। তবে পেঁয়াজের দাম খুব সহসা কমে যাবে। কারণ, এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করবে।’