সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও লালদিয়ার চর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে গণঅনশনে বসেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরের শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে দিনভর।
স্কপ নেতারা এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
এনসিটি, লালদিয়ার চর টার্মিনাল এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটরদের সঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করার বিষয়টি গেল ১২ অক্টোবর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ জানিয়েছেন।
ঢাকার পল্টনে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক সেমিনারে তিনি এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, এর মধ্যে লালদিয়ার চর টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে ৩০ বছরের জন্য, আর বাকি দুই টার্মিনাল পরিচালনার মেয়াদ হবে ২৫ বছর।
সরকারের এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে গণঅনশন কর্মসূচিতে স্কপের কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এনসিটি বর্তমানে দেশের সবচেয়ে সফল কন্টেইনার টার্মিনাল।
তিনি বলেন, “এনসিটিকে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী। এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি তপন দত্ত বলেন, বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া এই একতরফা সিদ্ধান্ত বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
“দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই চক্রান্ত জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।”
তিনি বলেন, “সরকারকে অবশ্যই এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় চট্টগ্রাম হরতাল ও অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে অচল করে দেওয়া হবে।”
কমসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো জনগণের সম্পদ রক্ষা করা, বিক্রি বা ইজারা দেওয়া নয়। অর্ন্তবর্তী সরকারের উচিত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।”
একই সঙ্গে তিনি বন্দর শ্রমিকদের হয়রানি ও অযৌক্তিক কারণ দর্শানো নোটিশের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের খোরশেদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ. ম. জামাল উদ্দিন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মছিউদ্দৌলা, স্কপের যুগ্ম আহবায়ক রিজোয়ানুর রহমান খান, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নুরুল আবসার তৌহিদ, জাহেদ উদ্দিন শাহিন, শানেওয়াজ চৌধুরী মিনু, ইফতেখার কামাল খান, টিইউসির কেন্দ্রীয় সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু।



















































