বিকল্প পথে সেন্টমার্টিনে নৌ যোগাযোগ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে বিকল্প পথে চলছে নৌযান চলাচল। যাত্রী ও জরুরি পণ্য আনা-নেয়ার জন্য টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ হয়ে সেন্টমার্টিনে চলছে এসব নৌযান।

শনিবার (২২ জুন) সকালে শাহপরীরদ্বীপ থেকে জরুরি পণ্য ও কিছু সংখ্যক যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন গেছে দুইটি ট্রলার। একই সঙ্গে সেন্টমার্টিন থেকে রোগীসহ ১৫ যাত্রী নিয়ে শাহপরীরদ্বীপ এসেছে দুইটি স্পিডবোট।

স্বাভাবিক রুটের চেয়ে বিকল্প রুটটিতে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে হলেও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

তিনি জানান, শনিবার সকালে শাহপরীরদ্বীপের বদরমোকাম এলাকা হয়ে দুইটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। ট্রলার দুইটি বেলা ১২টার দিকে দ্বীপে গিয়ে পৌঁছেছে। এই ট্রলার দুইটিতে ৩০০ গ্যাস সিলিন্ডার, কিছু খাদ্য পণ্য ও ৩০-৪০ জন যাত্রী ছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার দুইটি ট্রলারযোগে দ্বীপের ৩৫ শিক্ষার্থীসহ ৯২ জন যাত্রী নিয়ে দুটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপে নিরাপদে পৌঁছেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, শনিবার প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দ্বীপ থেকে রোগীসহ ১৫ যাত্রী নিয়ে দুটি স্পিডবোট নিরাপদে শাহপরীরদ্বীপে পৌঁছেছে।

এ দুই প্রতিনিধি বিকল্প পথে সীমিত পরিসরে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, কোস্টগার্ড, বিজিবি, নৌবাহিনীর সার্বিক নজরধারী ও নিরাপত্তায় দ্বীপে যাতায়াত স্বাভাবিক হচ্ছে। এতে এখনও কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও স্বস্তিতে আছে দ্বীপবাসী। যদিও বিকল্প পথটিতে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে হয়। এতে কিছুটা ঝুঁকিও রয়েছে। তবু দ্বীপের প্রয়োজনে এটিকে মঙ্গল মনে করছেন তারা।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে গত ১ জুন বিকালে পণ্যসহ ১০ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাত্রা করা ট্রলারে  নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। এরপর গত ৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত করা একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে ফেরা ট্রলার আবারও গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। গত ৮ জুন আরও একটি ট্রলারে গুলি করা হয় একই পয়েন্টে। সর্বশেষ ১১ জুন একটি স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। তবে এ গুলি বর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরের জলসীমায় ছিল। মিয়ানমারের জলসীমা থেকে ট্রলারযোগে এগিয়ে এসেই এ গুলি বর্ষণের ঘটনাটি করা হয়। একই পয়েন্টে ৪ বার গুলি বর্ষণের ঘটনায় কোনো হতাহত না হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান বন্ধ হয়ে যায়। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট ও জরুরি আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ১২ জুন জরুরি সভা করে বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে যাত্রীর যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১৩ জুন থেকে টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকূল ব্যবহার করে যাত্রী যাতায়াত শুরু হয়। ১৪ জুন কক্সবাজার শহর থেকে পণ্য নিয়ে জাহাজ যায়।