বিএনপি নেতার গলায় মালা পড়ালেন ওসি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মাসুদুর রহমান রিপন পেদার গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে দিয়েছেন নড়িয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ। এমন একটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে। যদিও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ সদস্যর এমন কাজ আইনের ব্যত্যয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

ফারুক আলম নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে দেখা যায় এক পুলিশ সদস্য বিএনপি নেতাকে মালা পড়িয়ে দিচ্ছেন। ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, মাসুদুর রহমান রিপন পেদার এই একটাই গুন, সে থানায় যায় না। ওসি স্যার তার কাছে আসেন শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। মন জুড়ানো একটি মুহূর্ত। শুভ কামনা মামা আপনার জন্য।

পুলিশ সদস্যের এমন ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি, দলের দাস এমনকি কোনো দলের আধিপত্য বা তেলবাজি করবে—এমন পুলিশ সদস্য চাই না। পুলিশকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। আমরা সব সময় চাই পুলিশের স্বাধীন কমিশন থাকবে। পুলিশ শুধু জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে এবং তাদের সেবা দেবে। নড়িয়ার ঘটনাটি অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ।

এ বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মাসুদুর রহমান রিপনকে পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ রয়েল মাঝি বলেন, এই বিষয়টা আমি জানি না, আপনার থেকেই প্রথম শুনলাম।

নড়িয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তার (বিএনপি নেতা মাসুদুর রহমান রিপন) সঙ্গে আমার আগে থেকেই ভালো সম্পর্ক ছিল। তার আমন্ত্রণে দেখা করতে গিয়েছিলাম। পাশাপাশি সেখানে একটি মামলার তদন্তও ছিল। তখন দেখি অনেকেই ফুলের মালা দিচ্ছেন। অনেকে সঠিকভাবে মালা পড়াতে পারছিলেন না, আমি পাশে বসে থাকায় মালা পড়িয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলাম। তখন হয়তো কেউ ছবি তুলেছেন।

এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, পুলিশ সদস্য হয়ে এমন কর্মকাণ্ড করার সুযোগ নেই। আমরা খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে শরীয়তপুরে থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করে আবু জাফর নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদও ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) করা হয়।