নিজস্ব প্রতিবেদক »
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে গণমিছিলের নামে বিএনপি-জামায়াত ঢাকা শহরে একটা বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুরো ঢাকা শহরজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এরপরও বিএনপির প্রধান সহযোগী জামায়াত ইসলামী পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। পুলিশ বাহিনীর ধৈর্যের কারণে তারা সেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেনি।
গতকাল শনিবার নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর জামায়াতের শিবিরের হামলার ঘটনা কেন হলো এবং পুলিশের কি প্রস্তুতি ছিল সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি বুঝতে পেরেছে তাদের সাথে জনগণ নাই। দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশ করবে বলে তারা সেখানে বড়জোড় ৫০/৬০ হাজার মানুষ জমায়েত করতে পেরেছে। এরপর থেকেই বিএনপি আসলে হতাশ।
তিনি বলেন, বিএনপি বিদেশিদের পদলেহন করার নীতি অবলম্বন করেছে। সেটি করেও কোন লাভ হয়নি। তারা যেভাবে মনে করেছিল বিভিন্ন রাষ্ট্র বা দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে নানা ধরনের কথা বলবেন, সেটি আপনারাও দেখতে পাচ্ছেন, সেটি হয়নি। তাদের রাজনীতিটা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
বিএনপি এখন আবার ২০১২/১৩ সালের রাজনীতির দিকে যাচ্ছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, তাদের রাজনীতি সেই একই জায়গায় আছে। গত ১০ ডিসেম্বরও তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এখনও সুযোগ পেলে একই কাজ করবে। তারা সেখান থেকে সরে আসতে পারেনি। তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর সারাদেশ কিভাবে উল্লসিত ছিল। সবাই পদ্মাসেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ এমনকি পাকিস্তানও অভিনন্দন জানিয়েছে, কিন্তু বিএনপি সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করেনি। মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর ঢাকা শহরের মানুষের মধ্যে যে উচ্ছাস, সেই মেট্রোরেল নিয়েও বিএনপি ধু¤্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। মানুষের উচ্ছাসে তাদের সেই অপচেষ্টা ভেসে গেছে।
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে আবারো এক নাম্বার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন, নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোন নাম্বার সেটা কোনো বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাকে যখনই যে দায়িত্ব দিয়েছেন তখনই সে দায়িত্ব আমি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি। আমি দশবছর দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, সাতবছর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, গত তিন বছর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। এসব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করেছি। আবারো আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন আমার নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, এখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে নিজেকে উজাড় করে দলের জন্য কাজ করা। প্রয়োজনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হলেও দাঁড়ানো এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা।
তিনি বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপির নাশকতা মোকাবেলা করেছি। বিএনপি কি করতে চাই, কতটুকু করতে পারে আমরা জানি। সেটাকে মোকাবেলা করার জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে কি করতে হবে সেটাও আমরা জানি। সুতরাং বিএনপি ওই ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের পরিস্থিতি আর কখনো সৃষ্টি করতে পারবেনা।
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির নমিনেশন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীতি মতাদর্শে বিশ^াস করে এমন যে কেউ নমিনেশন চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে কোন চিত্র নায়ক-নায়িকা চাইলে সেটি অপরাধ নয়। পশ্চিম বাংলাসহ ভারতবর্ষে মিডিয়া জগতের অনেককেই নমিনেশন দেয়া হয়। অবশ্যই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় যারা আওয়ামী লীগের পোড় খাওয়া নেতাকর্মী তাদেরই অগ্রাধিকার। পাশাপাশি দলকে আরো অনেক বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়।