নিজস্ব প্রতিবেদক »
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী ২৮ তারিখ নাকি বিএনপি সরকারের পতনযাত্রা শুরু করবে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নয়া পল্টন অফিসের সামনে থেকেও সরকারের পতনযাত্রা শুরু করতে চেয়েছিল, সেটি গোলাপবাগের গরুরহাটে গিয়ে মারা পড়েছিল। এবারও সরকারের বিরুদ্ধে পতনযাত্রা শুরু করতে গিয়ে বিএনপি নিজেদের পতনযাত্রা শুরু করবে। সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির পতনযাত্রা যমুনা কিংবা বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে ডুবে যাবে। আর চট্টগ্রামে করলে কর্ণফুলী নদী কিংবা বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে দেয়া হবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সবংর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সভাপতি জাবেদ জাহাঙ্গীর টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিয়া মনসফ।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশটা যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি পড়েছে। সেই শকুনের সহযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতির কাকেরা। জিয়াউর রহমান ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিলেন বিএনপি। তিনি যখন উচ্ছিষ্ট বিলালেন তখন বিভিন্ন দলের নেতারা গিয়ে উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য জড়ো হলেন। ওরা রাজনীতির কাক। বিদেশি শকুনের দৃষ্টি যখন দেশের ওপর পড়েছে তখন রাজনীতির কাকেরা তাদের সহযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই শকুন আর রাজনীতির কাকের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ জনতা ও রাজপথের দল, আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করার জন্য। ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে বিরোধী দলে থেকে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। আমরা জানি রাজপথে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয়। যারা বোরকা পড়ে হাইকোর্টে জামিন নিতে হাজির হন আর কারো ভেলকিতে গর্তে ঢুকে যান, তারা কতটুকু আন্দোলন করবেন আমরা জানি।
তিনি বলেন, সিলেটে বিএনপি সমাবেশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা জ¦ালাময়ী বক্তৃতা করে বলেছেন, দেশের মানুষ এখন খেতে পারছে না। এরপর সেই সমাবেশে যিনি খাবার সাপ্লাই দিয়েছিলেন তিনি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়ে বললেন, আমি ১০ হাজার লোকের বিরিয়ানি পাকিয়েছিলাম, ১২ হাজার মানুষ খেয়েছে। নিজেরা মোরগ বিরিয়ানি খেয়ে সমাবেশে বললেন, দেশের মানুষ খেতে পারে না। বিএনপির সমাবেশ হলো একটা পিকনিক, বিরিয়ানি খাবার জন্যই তারা জনসভায় সমবেত হয়, ২৮ তারিখে একটা বড় পিকনিক করতে চান ওরা। আমরা পিকনিক থেকে ওদেরকে বুড়িগঙ্গায় নৌকা বাইচে পাঠিয়ে দেব।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে শিশুদেরকে পাখি শিকারের মতো শিকার করা হচ্ছে, হাসপাতালে বোমা নিক্ষেপ করে আটশ’ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের গীর্জাও রেহাই পায়নি। সেখানে হামলা চালিয়ে ১৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে প্রতিদিন হত্যা করা হচ্ছে। বিএনপি দেশ পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখে। যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, শকুনরা নাখোশ হতে পারে সেই ভাবনায় তারা কোন কথা বলে না। ওরা আবার দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখে। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। মানবতার বিরুদ্ধে যখন অপরাধ সংঘটিত হয় তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবী প্রতিবাদ জানায়, তখনও বিএনপি নিশ্চুপ থাকে। তারা দেশের সমস্ত সম্পদ শকুন লুট করে নিলেও নিশ্চুপই থাকবে। এদের হাতে দেশটাকে তুলে দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, পৃথিবী যখন থমকে গেছে, মানুষ যখন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের ঘর করে দেয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ। যে মানুষটি বৃষ্টির সময় অপরের আঙিনায় আশ্রয় নিত, খরতাপে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিত, সে স্বপ্ন দেখত আমার যদি একটা কুঁড়েঘর থাকত। তাদের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা কুঁড়েঘর নয়, তাদেরকে জমির মালিকানাসহ পাকাবাড়ি করে দিয়েছেন। পৃথিবীর কোথাও এভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ঘর করে দেয়া হয়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদেরকে প্রচ- পছন্দ করতেন। শেখ রাসেল একজন মেধাবী ও মানবিক শিশু ছিল। আপনারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্য-আলোচনায় শুনেছেন শেখ রাসেল কি রকম মানবিক ছিল। আমরা দেশটাকে উন্নত করতে চাই। আমাদের স্বপ্ন একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠন করা। উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের সাথে সাথে যদি ইউরোপের মত মানবিকতা হারিয়ে যায় তাহলে সেই উন্নত রাষ্ট্রের প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মনিরুজ্জামান লিটন, সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম নওশের আলী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার উপদেষ্টা মোহাম্মদ আকতার হোসেন খান, সাদাত আনোয়ার সাদী, পৃষ্ঠপোষক হেলাল মোহাম্মদ নূরী, লায়ন আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য আ ম ম দিলশাদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন বাবুল প্রমুখ।