নিজস্ব প্রতিবেদক »
এস আলম গ্রুপের ১৪টি গাড়ি সরানোর ঘটনায় বিএনপির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী কমিটি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।
এর আগে গতকাল শনিবার (৩১ আগস্ট) এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরাতে সহযোগিতার ঘটনায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় দলটি।
শনিবার বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবর রহমান শামীম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
বিএনপি থেকে নোটিশ পাওয়া দলটির নেতারা হলেন- চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, প্রথম যুগ্মআহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়া।
তার আগে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে কালুরঘাট শিল্প এলাকার (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি, পোরশে ও রেঞ্জরোভার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্মআহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় তদারকি করছেন। তাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়িচালক মনসুরও ছিলেন।
দলের নেতারা উপস্থিত থেকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ছাত্র-জনতার মাঝে, উঠছে নানা প্রশ্ন। এর মধ্যেই দলটি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করল।
মূলত, কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এস আলমের সম্পদ যেন কেউ না কেনেন, দেশের স্বার্থে অন্য কেউ যেন এই সম্পদে হাত না দেয়।’
এরপরই এস আলম গ্রুপ বিএনপি নেতাদের সহায়তায় তাদের সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ শনিবার (৩১ আগস্ট) এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে। এতে বিষয়টির বিস্তারিত উপস্থাপন করে বিএনপি নেতারা দাবি করেন এসব ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা বানোয়াট খবর।