সুমন শাহ্, আনোয়ারা:
করোনা প্রাদুর্ভাবে জনমনে ত্রাহি অবস্থা। সাধারণ ছুটি, লকডাউনের এসময়ে স্বসিত্ম খুঁজে পেয়েছেন ছাদ বাগানে। ফলে পাল্টে যাচ্ছে চট্টগ্রামের গ্রাম-গঞ্জের পরিবেশ ও প্রকৃতি। যার ছোঁয়া লেগেছে রাসত্মায় থাকা গাছের সারি, বাসার টবে। এ অলস সময়ে মানুষ বসে নেই। কেউ বাড়ির ছাদে করেছেন সবজি বাগান, কেউ ফুল বাগান, কেউ মিশ্র ফলবাগান, আবার অনেকে ছাদকে সাজিয়েছেন নানান বাহারি গাছে।
ছাদ বাগানগুলো একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখছে তেমনি করোনাকালে অলস সময়ে কাজের ড়্গেত্র তৈরি করে দিয়েছে। আগে মানুষকে ক্যাম্পেইন করে জাগাতে হতো কিন্ত এখন দিন বদলে গেছে। অনেকেই নিজে ইচ্ছে করেই ছাদ বাগানে মনোনিবেশ করছেন, দিচ্ছেন বাড়তি সময়।
কর্ণফুলী উপজেলার জুধলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল কাদের তিন বছর ধরে নিজের বাড়ির ছাদে শখের বসে গড়ে তুলেছেন বাগান। তিনি কোরিয়ান কেইপিজেডে চাকরি করেন। অবসর সময়ে নিজ বাড়ির ছাদে শখের বসে এই বাগান গড়ে তুলেছেন। বাড়ির ছাদের জায়গাকে কাজে লাগিয়ে বিষমুক্ত ফল খাওয়া যাবে আবার প্রকৃতি সৌন্দর্য মনকে প্রশানিত্ম দিবে এমনটাই ভাবেন। সিঁড়িতে উঠার সময় সব জায়গাতেই দেখা যাবে টবে এসব ফুল বা ফলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশ করে ছাদে যাওয়ার সময় অনেকের মনে হতে পারে এটা প্রকৃতির বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে চলেছি। ছাদে বাগানে রয়েছে জামরম্নল, বার মাসে ফল হয় এমন আম গাছ, কদবেল, লেবু, কয়েক প্রকার পেয়ারা, পেঁপে, ড্রাগন, গোলমরিচ, জলপাই, কামরাঙ্গা, করমচা, কমলাসহ দেশি বিদেশি কয়েক রকমের ফলের গাছ। এছাড়াও রয়েছে টবে বিভিন্ন জাতের পাতা বাহার ও ফুলের গাছ।
আবদুল কাদের জানান, তিনবছর ধরে বাড়ির ছাদে বাগান করছি। প্রথমে বাড়ির ছাদে টবে একটি ড্রাগন ফলের গাছ লাগাই। এরপর বিষমুক্ত ফল খাওয়ার জন্য বিভিন্ন ফলের গাছ রোপণ করি। কিছু ফলগাছ আছে যে গুলোতে সারা বছরই ফল ধরে। ছাদের বাগানে চাষ করা বিষমুক্ত ফল নিজে পরিবার নিয়ে খাই। আমি নিজে অবসরে গাছের পরিচর্যাব করি। অফিস থেকে এসে এই ছাদের বাগানে না এলে মনটাই যেন ভরে না।
পটিয়া উপজেলার (কর্ণফুলীর অতিরিক্ত) কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান বলেন, আবাদি জমির উপর মানুষ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে। যার ফলে কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। বাড়ির ছাদসহ বাড়ির আশেপাশের পড়ে থাকা ফাঁকা জায়গায় যদি আমরা ছোট ছোট আকারের বাগান তৈরি করি তাহলে সেই বাগান থেকে নিজেদের চাহিদা মতো বিষমুক্ত ফল ও সবজি খেতে পারবে। বাড়ির ছাদে এই শখের বাগান তৈরি করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্যও সরকারের কৃষি অফিসের দুয়ার সব সময় খোলা। তিনি আরো বলেন, ছাদ বাগান একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তেমনি বাড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে।