সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুবিনুল হায়দারের মৃত্যু হয়। ৮৭ বছর বয়সী মুবিনুল হায়দার অকৃতদার ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের সন্তান। তাঁর গ্রামের বাড়ি সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডে।
মুবিনুল হায়দার চৌধুরী গত ১৪ মার্চ গোসল করতে গিয়ে বাথরুমে পড়ে যান। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে ও রক্তপাত হয়। তার মেরুদণ্ডের একটি হাড়ও ভেঙে যায় এবং স্নায়ুতে চাপ লাগার কারণে দুই হাত, দুই পা আংশিক অবশ হয়ে পড়ে। তারপর থেকে অসুস্থ ছিলেন তিনি। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ জুন থেকে তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। তিনি হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন।
শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর মরদেহ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে দান করা হবে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
মতাদর্শিক দ্বন্দ্বে জাসদ ভেঙে বাসদ গঠনের ক্ষেত্রে মূল কারিগর মনে করা হয় স্বাধীনতার পর ভারত থেকে শিবদাস ঘোষের দর্শন নিয়ে আসা মুবিনুল হায়দারকে। এরপর সেই বাসদ কয়েক ভাগে ভাগ হলে একটি অংশের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
মুবিনুল হায়দার একসময় ভারতের কমিউনিস্ট দল সোশালিস্ট ইউনিটি সেন্টারে (এসইউসিআই) যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি দেশে ফেরেন।
স্বাধীনতার পর গঠিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের অভ্যন্তরে মতাদর্শিক বিতর্ক শুরু হলে ১৯৮০ সালে আ ফ ম মাহবুবুল হক ও খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি অংশ বেরিয়ে বাসদ গঠন করে।
জাসদ ভেঙে বাসদ হওয়ার পেছনে মুবিনুল হায়দারের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তাকে বাসদের তাত্ত্বিক নেতা মনে করা হত।
পরে আ ফ ম মাহবুবুল হক ও খালেকুজ্জামানের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে বাসদ আবার ভাঙে। তখন খালেকুজ্জামান নেতৃত্বাধীন অংশকেই ছায়া দিয়ে ছিলেন মুবিনুল হায়দার।
২০১৩ সালে খালেকুজ্জামানের বাসদ থেকে বেরিয়ে বাসদ (মার্কবাদী) গঠন করেন মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ও শুভ্রাংশু চক্রবর্তী।
বলা হয়, এসইউসিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিবদাস ঘোষকে আন্তর্জাতিক সাম্যবাদী আন্দোলনের ‘অথরিটি’ না মানায় আলাদা বাসদ গঠন করেন মুবিনুল হায়দার। তার সঙ্গে তখন শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ছিলেন। পরে শুভ্রাংশু চক্রবর্তীও বাসদ (মার্কসবাদী) থেকে বেরিয়ে আলাদা দল গঠন করেন। ফলে বাসদের একটি অংশ নিয়েই ছিলেন মুবিনুল হায়দার।