সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশে ১২ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার পাশাপাশি ৪০ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস মিলনাতনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাসমান মানুষদেরও সরকার টিকার আওতায় আনবে। তাদের দেওয়া হবে জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি এক ডোজের কোভিড টিকা।
মন্ত্রী বলেন, ১২ বছরের বেশি বয়সীরা অন্যদের মত নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধন না করলেও জন্মনিবন্ধন কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলে টিকা নিতে পারবে।
“আমরা এখন ১২ বছর বয়স থেকে শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছি। এখন এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হল। স্কুলে যারা আসতে পারছে না, মাদ্রাসাসহ যেখানেই যে আছে, ১২ বছরের বেশি সবাইকে টিকা দেওয়া হবে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে ৪০ বছরের বেশি বয়সী সবাই করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। রোববার থেকেই তা শুরু হচ্ছে।
গতবছর ফেব্রুয়ারিতে দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরুর পর ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলপড়ুয়াদের কোভিড টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। জানুয়ারিতে সারা দেশে শুরু হয় সেই কার্যক্রম।
আর গত ২৮ ডিসেম্বর সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, যারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, এবং যারা বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন, তাদের করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। পরে ১৭ জানুয়ারি সেই বয়সসীমা কমিয়ে ৫০ বছর করা হয়।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পরে বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। যে আগে যে হাসপাতাল থেকে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, সেই হাসপাতাল থেকে তার মোবাইলে বুস্টার ডোজের তারিখ জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। সেই কেন্দ্রে নির্ধারিত দিনে গিয়ে তৃতীয় ডোজ নিতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “৫০ বছরে কমিয়ে আনার পরও দেখা গেছে, খুব বেশি মানুষকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা যাচ্ছে না। এ কারণে বয়সসীমা আরও কমিয়ে এনেছি। আজ থেকে আমরা বুস্টার ডোজ দেওয়ার সময়সীমা চল্লিশে নামিয়ে আনলাম। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে আমরা আরও বেশি মানুষকে টিকা দিতে পারব।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী শনিবার পর্যন্ত দেশে ৯ কোটি ৭০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৮ জন কোভিড টিকার অন্তত এক ডোজ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৬২৫ জন পেয়েছেন দুই ডোজ টিকা। আর ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৮৭ জন তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন।
গত ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রথমবারের মত জনসন অ্যান্ড জনসনের ৩ লাখ ৩৬ হাজার ডোজ টিকা পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। এক ডোজের এসব টিকা ভাসমান মানুষকে দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
“যারা ভাসমান লোক আছে, ঠিকানা সব সময় পাওয়া যায় না। তাদেরকে আমরা এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ এটা সিঙ্গেল ডোজ টিকা। একবার দিলে আর দ্বিতীয়বার তাকে আসতে হবে না।”
জাহিদ মালেক জানান, এখন টিকাদান কর্মসূচিতে লোকজন ‘কম আসছে’। সে কারণে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের সদস্যদের মধ্যে যারা টিকা নেওয়া বাকি আছে, তাদের টিকা দেওয়া হবে।
সূত্র : বিডিনিউজ