বাম্পার ফলনের আশা

পাহাড়ে আমের মুকুল

মিন্টু মারমা, মানিকছড়ি

প্রকৃতিতে এখনো ফাল্গুন আসেনি, শীতও শেষ হয়নি। অথচ এরই মধ্যে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার আম বাগানগুলোর গাছে গাছে ফুটেছে মুকুল। এইসব আমবাগানগুলো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিকরা।
এই অঞ্চলে এবার বেশ আগেভাগেই গাছে মুকুল এসেছে। মানিকছড়ি উপজেলার ব্যক্তিমালিকানা ও বাণিজ্যিক ছোট-বড় আম বাগানগুলোতে থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি বছর আমের ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ উপজেলায়। এমনটিই ধারণা বাগান মালিকদের।

সরেজমিনে উপজেলার বাটনাতলী, যোগ্যাছোলা, তিনটহরী ও মানিকছড়ি (সদর) ইউনিয়নের বিভিন্ন ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের আম বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবকটি বাগানের ঢালে ঢালে ঝুলছে আমের মুকুল। সড়কের দুপাশ ও বাড়ির আঙিনার আম গাছগুলোর সবুজ পাতা ঢেকে রয়েছে মুকুলে। আমবাগান ও মুকুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও শ্রমিকরা।
উপজেলার বাটনাতলী এলাকায় ২৭ একর টিলা ভূমিতে গড়ে তোলা উপজেলার সবচেয়ে বড় আম বাগানের মালিক মো. আবু তাহের জানান, ২০১১ সালে গড়ে তোলা তার বাগানে মোট ১২শ টির বেশি আম গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে ২০২১ সালে তিনি ৪০ লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছেন। গেলো বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বিক্রি হয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা। আর এ বছর অনেক আগেভাগেই মুকুল এসেছে গাছগুলোতে। অন্যন্য বছরের তুলনায় এবছর সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে। তাই চলছে নিয়মিত পরিচর্যা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে উৎপাদন গেলো বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাগান মালিকরা জানান, তুলনামূলকভাবে এবছর সবচেয়ে বেশি ও শতভাগ গাছে মুকুল এসেছে। মাঘের মাঝামাঝিতে বেশির ভাগ মুকুল আসায় ঝরে পড়ার আশঙ্কা কম এবং এগুলো স্থায়ী হবে। এ মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে মানিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাসিনুর রহমান বলেন, উপজেলার গত মৌসুমে ৪৩০ হেক্টর টিলা ভূমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৬০০০ মেট্রিক টন। এ বছর আগে-ভাগেই আম বাগানে মুকুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার লক্ষ্যমাত্রা আগের চেয়ে অন্তত ২০% বেশি হবে।
তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে মুকুল ও গাছ পরিচর্যায় ভুল করলে ফলন বিপর্যয় হবে। আমের মুকুলের শত্রু হপার পোকা। এর আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ইমিডা ক্লোরোপিট, প্রতি লিটার পানিতে ১মিলি বা আধা মিলি ওষুধ মিশিয়ে ছিটাতে হবে। পাশাপাশি ছত্রাক নাশক (ম্যানকোজেব) ছিটালে আরও ভালো। গাছে মুকুল আসা থেকে ফল পর্যন্ত কমপক্ষে ৭ বার ওষুধ দিতে হবে বলে জানান তিনি।