সংবাদদাতা, বান্দরবান
বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে জেএসএস সংস্কার পন্থি এমএন লারমা গ্রুপের জেলার সভাপতিসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের বাঘমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় আরো ৩ জন। নিহতরা হলেন বান্দরবান জেলার সভাপতি রতন তংচঙ্গ্যা, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি প্রজিত চাকমা, সদস্য ডেবিড মার্মা, মিলন চাকমা, জয় ত্রিপুরা ও দিপেন ত্রিপুরা। এসময় আহত হয় আরো তিনজন। আহতরা হলেন বিদ্যুৎ ত্রিপুরা, নিরম্ন চাকমা ও মেমানু মারমা।
জানা গেছে, পাহাড়ে আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেএসএস এর মূল দল জনসংহতি সমিতি জেএসএস ও সংস্কার পন্থি এমএন লারমা গ্রম্নপের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের বাঘমারা এলাকার ভিতরের একটি পাড়ায় সংস্কারপন্থি এমএন লারমা গ্রম্নপের সভাপতি রতন তংচঙ্গ্যার বাসায় সংস্কার পন্থিদের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে একসাথে বসে নাসত্মা করছিল এমন সময় ৫/৬ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ বাসায় ঢুকে গুলি চালায় এতে ঘটনাস’লেই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি প্রজিৎ চাকমা সভাপতি রতন তংঞ্চগ্যা মারা যায় গুলির আওয়াজ শুনে কয়েকজন পালিয়ে বাচাঁর চেষ্টা করলেও সন্ত্রাসীরা তাদের ব্রাশ ফায়ার করে এতে পালানোর সময় বাড়ির উঠানে তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এসময় আহত হয় আরো তিনজন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। আহত ও নিহতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। স’ানীয় ইউপি সদস্য সেম্প্রু মার্মা বলেন, সকালে বাগমারার পূর্ব দিক থেকে একটি সশস্ত্র গ্রুপ এলাকায় প্রবেশ করে রতন তংঞ্চগ্যার বাসায় হামলা চালায়, নিহতরা সবাই ওই ঘরে অবস্থান করছিল। তবে হামলার পর অনেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন’ তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাড়ির উঠানে পড়েছিল দেখেছি। এ ব্যাপারে এমএন লারমা গ্রম্নপের বান্দরবান জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা জানান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি বান্দরবান জেলার সভাপতির বাসায় আসছিল সকালে ঘুম থেকে উঠে তারা নাসত্মা করার জন্য বসছিল, এমন সময় অস্ত্রধারী ৫/৬জন সন্ত্রাসী পাড়ার পূর্ব দিকের পাহাড় থেকে নেমে এসে সভাপতি রতন তংঞ্চঙ্গ্যার বাড়িতে প্রবেশ করে গুলি করে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়।
কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উবামং বলেন, সন্ত্রাসীদের তো চিনি না তবে তারা জেএসএস সন্তু লারমা গ্রুপের সদস্য হতে পারে। এদিকে এ ঘটনার পর ঐ এলাকায় জনগণের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অনত্র নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাসদস্যরা এলাকাটিতে টহল জোরদার করেছে। তবে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, গোলাগুলির ঘটনায় জেএসএস সংস্কার পন্থি এমএন লারমা গ্রম্নপের ৬ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আহত ও নিহতদের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।