সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
সম্ভাবনা ছিল বড় কিছুর। শুরু যেভাবে হয়েছিল, রান তিনশ ছাড়ানোর প্রত্যাশা বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছিল না তখন। কিন্তু যেভাবে নিজেদের উইকেট দিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা, প্রশ্ন বরং তা নিয়ে। দলে ফেরা মুমিনুল হক রান পেলেন, কিন্তু আউট হলেন অদ্ভূতভাবে। বাংলাদেশ অলআউট হওয়ার পর শেষ বিকেলে ভারতের কোনো উইকেটও নিতে পারেনি।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয়টিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-ভারত। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২২৭ রানে অলআউট হয়ে গেছে স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে প্রথম দিনে খেলা ৮ ওভারে ১৯ রান তুলে কোনো উইকেট হারায়নি ভারত। খবর বাংলানিউজের।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ঘণ্টা কাটিয়ে দিয়েছিলেন আগের ম্যাচেই শতরান পেরোনো উদ্বোধনী জুটি গড়া জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঝে অবশ্য তারা দিয়েছিলেন কয়েকটি সুযোগ। জাকিরের ক্যাচও ছাড়েন মোহাম্মদ সিরাজ। তবে এরপরও ঠিক ছিল রানের গতি।
কিন্তু হঠাৎই হয় ছন্দপতন। জয়দেব উনাদকাটের বলে কাট করতে গিয়ে চতুর্থ স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জাকির। ১ চারে ৩৪ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।
তিন বল পরই আউট হয়ে যান শান্ত। রবীচন্দ্রন অশ্বিনের বলে প্যাড আপ করেন তিনি। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নেন। পরে আম্পায়ারস কলে সাজঘরে ফেরত যেতে হয় ৫৭ বলে ২৪ রান করা শান্তকে।
দুজনের বিদায়ের পর চারে অনেকটা চমক হিসেবে আসেন সাকিব আল হাসান। কাজ অবশ্য হয়নি তাতে। ১ চার ও ছক্কায় উমেশ যাদবের বলে মিড অফের উপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে চেতেশ্বর পূজারার হাতে ক্যাচ দেন সাকিব। ৩৯ বলে তিনি করেন ১৬ রান।
মুশফিকুর রহিমও আরও একবার ব্যর্থ বড় রান করতে। এই ব্যাটার ৪৬ বল খেলে ২৬ রান করে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো ঋষভ পন্থের হাতে। তার পর ক্রিজে এসে দারুণ করছিলেন লিটন দাস। যথারীতি খেলছিলেন মুগ্ধ হওয়ার মতো শট। কিন্তু হঠাৎই অশ্বিনের বলে মিডউইকেটে সহজ এক ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ বলে ২৫ রান করেন লিটন।
এরপর থেকে মুমিনুল হকের সঙ্গী হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নেতৃত্বের পর দলে জায়গাও হারিয়েছিলেন মুমিনুল, ফিরেই তিনি হাঁকিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। বছরের প্রথম দিনে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর থেকে আর রানের দেখা পাচ্ছিলেন না।
শেষ সপ্তাহে এসেও ছুঁতে পারেননি তিন অঙ্কে। নবম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরত যাওয়ার সময় ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৫৭ বলে ৮৪ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের আগেই ফিরেছিলেন নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সাতে নেমে মিরাজ ৫১ বলে ১৫ ও সোহান ১৩ বলে ৬ রান করেন আটে খেলে।
বাংলাদেশ শেষ অবধি অলআউট হয় ২২৭ রানে। ভারতের পক্ষে ১৫ ওভারে ৪ মেডেনসহ ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন উমেশ যাদব। ২১ ওভার ৫ বল হাত ঘুরিয়ে ৭১ রান দিয়ে চার উইকেট নেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন।
শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছিল ভারতের ব্যাটাররা। সাকিব ও তাসকিন আহমেদ দুজনই আট ওভারের সবগুলো করেন। ইনিংসের শেষ ওভারে সাকিবের বলে আউটও দেওয়া হয়েছিল লোকেশ রাহুলকে। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। ৩০ বলে ৩ রান করে অপরাজিত আছেন ভারতীয় অধিনায়ক। ২০ বলে ১৪ রান করেছেন শুভমন গিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
প্রথম দিনশেষে
বাংলাদেশ ২২৭/১০ (মুমিনুল হক ১৫৭ বলে ৮৪, নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৭ বলে ২৪, জাকির হাসান ৩৪ বলে ১৫, সাকিব আল হাসান ৩৯ বলে ১৬, মুশফিকুর রহিম ৪৬ বলে ২৬, লিটন দাস ২৫ বলে ২৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫১ বলে ১৫, নুরুল হাসান সোহান ১৩ বলে ৬, তাসকিন আহমেদ ১৬ বলে ১, তাইজুল ইসলাম ৪ বলে ২, খালেদ আহমেদ ২ বলে ০; মোহাম্মদ সিরাজ ৯-১-৩৯-০, উমেশ যাদব ১৫-৪-২৫-৪, জয়দেব উনাদকাট ১৬-২-৫০-২, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ২১.৫-৩-৭১-৪, অক্ষর প্যাটেল ১২-৩-৩২-০)।
ভারত ১৯/০ (লোকেশ রাহুল ৩০ বলে ৩, শুভমন গিল ২০ বলে ১৪; তাসকিন আহমেদ ৪-২-৮-০, সাকিব আল হাসান ৪-২-১১-০)।