সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪১ জন সংসদ সদস্য। বুধবার এই চিঠি পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার চিঠি পাওয়ার বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। চিঠিতে অস্ট্রেলীয় সংসদ সদস্যরা (এমপি) বাংলাদেশে একটি নির্দিষ্ট ও সময় বেঁধে দেওয়া নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ, ‘মনসুন বিপ্লব’র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার এবং র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলকতা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। এটি জরুরি এবং আপসহীন একটি পদক্ষেপ।
তারা আরও বলেন, এই পর্যায়ে বিলম্ব বা অনিশ্চয়তা জনগণের আস্থা আরও দুর্বল করবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলবে। চিঠিতে ড. ইউনূসকে সিদ্ধান্তমূলক নেতৃত্বের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই মুহূর্তে অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর লারিসা ওয়াটার্স, ডেভিড শুবারিজ, ফাতিমা পেইম্যান, লিডিয়া থর্প, মেহরিন ফারুকি, স্টেফ হজিনস-মে, বারবারা পোককসহ আরও অনেকে।
চিঠিতে অস্ট্রেলিয়ান এমপিরা ‘মনসুন বিপ্লবে’ বাংলাদেশের জনগণের সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের আস্থা পুনর্গঠনের ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনেই স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতার অভাব ছিল। একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তর নিশ্চিতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণাধীন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রয়োজন।
চিঠিতে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আইন ও প্রশাসনিক সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানানো হয়। তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এমন একটি দেশ হিসেবে দেখতে চাই, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত।
চিঠিতে ‘মনসুন বিপ্লব’ ও অতীত রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার পরিবারগুলোর জন্য সত্য, ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।
চিঠির শেষভাগে অস্ট্রেলিয়ান এমপিরা র্যাবকে অবিলম্বে বিলুপ্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে বারবার গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতন।