নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »
১০ বছর আড়াই মাসের বেশি সময় ভারতের শিলংয়ে নির্বাসিত জীবন থেকে বাংলাদেশে ফেরার পর গতকাল বুধবার নিজের জন্মভূমি কক্সবাজারে এসেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও চকরিয়া পেকুয়া (কক্সবাজার ১) আসনের সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল দুপুরে তিনি সহধর্মিণী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এরপর কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় পরিদর্শন শেষে তিনি কক্সবাজার, রামু ও ইদগাও উপজেলা বিএনপি আয়োজিত পৃথক গণসংবর্ধনা সমাবেশে যোগদান করেন। বিকাল পাচটার পরে তিনি সড়কপথে পৌঁছান চকরিয়া পৌর বাসটার্মিনাল মাঠে চকরিয়া উপজেলা, পৌরসভা বিএনপি আয়োজিত বিশাল গণসংবর্ধনা সমাবেশে। এ সময় সমাবেশটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেখতে আসা দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও জনসাধারণের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসংবর্ধনা সমাবেশে প্রধান অতিথি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা ছিল বলেই মহান রাব্বুল আলামিনের দয়ায় আমি মৃত্যুকূপ থেকে ফিরে আসতে পেরেছি। আমি বন্দিদশায় সবসময় আল্লাহর দরবারে একটি ফরিয়াদ জানিয়েছি, মৃত্যু হলেও আমার মরদেহ যাতে গুম করা না হয়, মরদেহ আমার পরিবারকে দেয়, চকরিয়া পেকুয়ার মাটিতে আমার জানাজা হয়। মহান আল্লাহ আমার ফরিয়াদ কবুল করেছেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে আর জুলম নির্যাতন সহ্য করা হবেনা। সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে শত-সহস্ত্র শহীদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা হবে। তাদের রক্তের অঙ্গীকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশে মুসলমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান সবাই এক এবং অভিন্ন, এখানে সবার পরিচয় হবে আমরা সবাই বাংলাদেশী।
তিনি বলেন, প্রতিটি সেক্টরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে একটি বৈষম্যের রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, এখনো দেশী-বিদেশী দোসররা নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদেশের ছাত্রজনতার বিজয় তারা নস্যাৎ করতে চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের জনগণের বিজয় এখনো পুরোটাই অর্জন হয়নি। তবে যেদিন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসবে, সেইদিন আমাদের বিজয় শতভাগ নিশ্চিত হবে। সেটি না হওয়া পর্যন্ত সবাই রাজপথে থাকবেন। আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আপনাদের অধিকার আপনাদের রক্ষা করতে হবে। সেখানে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যাঁরা অতীতে অন্যায় অবিচার অপর্কমে জড়িত ছিল, তাদের আইনের হাতে তুলে দেবেন, আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তি ও সাজা নিশ্চিত করা হবে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, যারা গণহত্যায় জড়িত, ছাত্রজনতা ও নিরীহ মানুষকে গুলি করে মেরেছে, আগামীতে বাংলাদেশে তাদের ঠাঁই নেই। তাদের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করা হবে।
তিনি সমাবেশে উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামীতে গণহত্যায় জড়িত চক্রের দোসররা ভোট চাইতে আসলে আপনারা তাদেরকে বয়কট করবেন। এব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়জী ও বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ এমএ মনজুর এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, কক্সবাজার জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিশান, বিএনপি নেতা এসএম আবুল হাশেম, এম মোবারক আলী, গিয়াস উদ্দিন, কুতুবউদ্দিন কমিশনার, এএম আলী আকবর, চকরিয়া উপজেলা উপজেলা যুবদলের সভাপতি সাংবাদিক এএম ওমর আলী, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শহিদুল ইসলাম ফোরকান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।